কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ে ফের টিএমসিপি-র গোষ্ঠী সংঘর্ষ

তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছেই। কোচবিহারে শুক্রবার কোচবিহার বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজের কর্তৃত্ব বজায় রাখা নিয়ে ফের দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছে। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনকে শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। এ নিয়ে এক মাসের মধ্যে ওই কলেজে চার দফায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনা হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২০
Share:

তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছেই। কোচবিহারে শুক্রবার কোচবিহার বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজের কর্তৃত্ব বজায় রাখা নিয়ে ফের দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছে। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনকে শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। এ নিয়ে এক মাসের মধ্যে ওই কলেজে চার দফায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনা হল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মাথাভাঙার নয়ারহাটেও দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্তৃত্ব নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে পুলিশ সহ ১১ জন জখম হন। ওই গোলমালের ঘটনায় পুলিশ দলের ৮ জনকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার কোচবিহারের ওই কলেজের ঘটনা নিয়ে অবশ্য কেউ গ্রেফতার হয়নি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “সংঘর্ষে ৫ জন জখম হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। কলেজের বাইরে গোলমাল হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।”

ওই ঘটনায় টিএমসিপি-র রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায় ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে সংগঠনের জেলা সভাপতি সাবির সাহাচৌধুরীর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। টিএমসিপি কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবিরবাবুর দাবি, ওই কলেজের ইউনিট সভাপতি হিসাবে কিছুদিন আগে সাহিনুল ইসলামকে নিয়োগপত্র দেন রাজ্য সভাপতি। তা মানতে নারাজ রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায়। এদিন তাঁর নেতৃত্বেই কলেজে হামলা হয় বলে অভিযোগ। পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। সাবির জানান, রাজ্য সভাপতিকে অভিযোগ জানাবেন।

Advertisement

টিএমসিপি-র রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায় অবশ্য ওই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, “কলেজের সাধারণ সম্পাদক টুইঙ্কল মহন্ত সহ ৫ জন জখম হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিত্‌সা করানো হয়েছে। কলেজে বহিরাগতরা গিয়ে মাঝেমধ্যে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মারধর করছে। এদিন ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। রাজ্য সভাপতিকে সব জানিয়েছি।”

ওই কলেজে এ মাসের ২২ তারিখে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে। তা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই দুই গোষ্ঠীর কর্তৃত্ব দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। টিএমসিপি জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ তৃণমূল যুব জেলা সভাপতি শুভজিত্‌ কুন্ডুর অনুগামীরা কলেজের সংসদে ক্ষমতাসীন। তৃণমূল নেতা অভিজিত্‌ দে ভৌমিক ঘনিষ্ঠ রাহুল রায়ের অনুগামীরা মাঝেমধ্যে গোলমালে জড়িয়ে পড়েছেন।

এদিন ওই কলেজে হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কলেজ চত্বরে একাধিক সাইকেল ও বাইক ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ। কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক টুইঙ্কল মহন্ত বলেন, “তৃণমূল জেলা যুব সভাপতির ঘনিষ্ঠ শিবিরের লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। আমাকেও মারধর করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতিকে সব জানাব।”

জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি শুভজিত্‌ কুন্ডু বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। যারা এ সব বলছেন তাদের পরিকল্পিত হামলায় আমাদের ছেলেরাই জখম হয়েছেন। ৪ জন চিকিসাধীন রয়েছেন। একজনের অবস্থা গুরুতর।” তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “নৈরাজ্য বরদাস্ত করা হবে না। বহিরাগতরা কলেজে হামলা চালিয়েছে। বেশ কয়েকজন ছাত্র চিকিত্‌সাধীন। হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন