গালের কাটা দাগই চেনাল অভিযুক্তকে

মাফলার দিয়ে মুখের অনেকটাই ঢাকা ছিল। তবে গালের কাটা দাগটা চোখ এড়ায়নি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীটির ছোট ভাইয়ের। তার বয়ানই ধরিয়ে দিল চাঁচলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনে অভিযুক্তকে। বুধবার ভোরে চাঁচলের তরলতলায় দিদি জামাইবাবুর ভাড়া বাড়ি থেকে অভিযুক্ত বিদ্যুৎ আচার্য ওরফে বিভাজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে। এ দিন তার হয়ে কোনও আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করেননি।

Advertisement

বাপি মজুমদার

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
Share:

মাফলার দিয়ে মুখের অনেকটাই ঢাকা ছিল। তবে গালের কাটা দাগটা চোখ এড়ায়নি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীটির ছোট ভাইয়ের। তার বয়ানই ধরিয়ে দিল চাঁচলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনে অভিযুক্তকে। বুধবার ভোরে চাঁচলের তরলতলায় দিদি জামাইবাবুর ভাড়া বাড়ি থেকে অভিযুক্ত বিদ্যুৎ আচার্য ওরফে বিভাজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে। এ দিন তার হয়ে কোনও আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করেননি।

Advertisement

কলিগ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ পেশায় গাড়ির চালক। সে মাঝেমধ্যে ভিন্রাজ্যেও থাকত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ দিন অভিযুক্তকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে থানায় জড়ো হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ধৃতকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়ি আটকে ধৃতের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।

অভিযোগের পরে সাত দিন কেটে গেলেও ঘটনার কিনারা না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছিল। গত মঙ্গলবারও অভিযুক্তকে ধরার দাবিতে পথে নেমেছিলেন ছাত্রীর স্কুল-সহ এলাকার সব ক’টি স্কুলের শিক্ষক-পড়ুয়ারাও। তদন্তে নেমে মৃতা ছাত্রীর ভাইয়ের বয়ান শুনে অভিযুক্তের ছবি আঁকায় পুলিশ।

Advertisement

এ দিন চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “অভিযুক্তকে ধরতে সিআইডির শিল্পীদের সাহায্য চাওয়া হয়। ছাত্রীর ভাইয়ের দেওয়া বর্ণনা শুনে সিআইডি ছবি আঁকে। সেই ছবিই অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে।” তবে ঘটনার পরে ধৃতের মা রুণা আচার্য বলছেন, “আমি ভাবতে পারছি না, ছেলে এমন কাজ করতে পারে। মনে হচ্ছে মাদক খাইয়ে ওকে দিয়ে অন্য কেউ এই কাজ করিয়েছে।”

নিহত ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় রিকশাচালক। অভিযুক্তের ধরা পড়ার খবর পেয়ে এ দিন বাসিন্দাদের সঙ্গে থানায় আসেন ছাত্রীর বাবাও। অভিযুক্তের ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভের সময় থানাতেই অসুস্থ হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন তিনি। বাসিন্দারাই তাঁকে সুস্থ করেন। কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের সদস্য বাহারাম খান বলেন, “অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

গত ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রীটি মাঠে পোয়াল আনতে যায়। সেখানে সাইকেল আরোহী এক যুবক স্কুলে টাকা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ছাত্রীকে নিয়ে যায়। পরদিন দুপুরে ১৩ কিলোমিটার দূরে হরিশ্চন্দ্রপুরের লক্ষ্মণপুর এলাকায় ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি কলাবাগান থেকে বালিকার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ধর্ষণের পর ওই বালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল তার ভাই। সিআইডির কাছে ছাত্রীর ভাই যুবকের শরীরের গঠন, চুলের ধরণের বর্ণনা দেয়। গালে একটি কাটা দাগের কথাও জানায়। তার কথা শুনে আঁকার পরে ছাত্রীর ভাই সেই ছবি চিনতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন