মানিকচক

গণধর্ষণে ধৃত প্রেমিক

যুবতীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার মালদহের মানিকচকে এক যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ‘প্রেমিকে’র সঙ্গে একটি নির্জন এলাকায় গিয়েছিলেন ওই যুবতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২২
Share:

ধৃত পিন্টু শেখ ও বদিরুদ্দিন শেখকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

যুবতীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার মালদহের মানিকচকে এক যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই ‘প্রেমিকে’র সঙ্গে একটি নির্জন এলাকায় গিয়েছিলেন ওই যুবতী। সেখানে দু’টি বাইক চেপে আসা ৫ দুষ্কৃতী প্রেমিককে বেঁধে রেখে যুবতীকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। গত শনিবার মানিকচক থানায় দায়ের করা অভিযোগেই ঘটনার সঙ্গে তাঁর প্রেমিক জড়িত থাকতে পারে বলে যুবতী নালিশ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত আরও এক যুবককেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত ২ জনকেই এদিন মালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান মূল ৫ অভিযুক্তই নিগৃহীতা যুবতীর ‘প্রেমিকে’র পরিচিত।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ‘প্রেমিকে’র নাম পিন্টু খান। সে কাশিম বাজারের বাসিন্দা। অন্য জন বদ্দিরুদ্দিন শেখ। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “গণধর্ষণের ঘটনায় যুবতীর প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”

পুলিশ জেনেছে নিজের বিবাহিত পরিচয় গোপন করে পিন্টু মানিকচকের এক যুবতীর সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি করে। পিন্টুর চার মাসের একটি মেয়েও রয়েছে। বছর দুয়েক আগে নিগৃহীতার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে পিন্টু। যদিও, নিজের বিয়ে বা পরিবারের বিষয় কিছুই যুবতীকে জানায়নি সে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, যুবতী বিয়ের জন্য জোর দিতে থাকে পিন্টুকে। গত শুক্রবার বিয়ে করবে বলেও পিন্টুু আশ্বাসও দিয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরে গঙ্গার পাড়ে একটি নির্জন এলাকায় যুবতীকে ঘুরতে নিয়ে যায় পিন্টু। সে সময়ই ৫ দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, বিয়ের প্রতিশ্রুতি যাতে না রাখতে হয়, সে কারণেই প্রেমিকাকে গণধর্ষণের পরিকল্পনা করে থাকতে পারে পিন্টু। পুলিশ জানিয়েছে, অন্য অভিযুক্তরা ধরা পড়লে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

Advertisement

এ দিকে অভিযুক্ত প্রেমিককে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী মহম্মদ সন্তু মিঞা। তাঁর যুক্তি, “এই ঘটনায় পিন্টুকে ফাঁসানো হয়েছে। যুবতী নিজেই অভিযোগ করেছিলেন, যে তাঁর প্রেমিককে ধরে রাখা হয়েছিল।” ঘটনার দিন, শুক্রবার বিকেলে ওই যুবতীকে নিয়ে পিন্টু প্রথমে মিল্কি বাজারে ঘুরতে যায় বলে পুলিশ জেনেছে। তার পর সন্ধ্যে বেলা তারা মানিকচকের বালুপুরের দিকে নিয়ে যায়। এলাকাটি নির্জন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় সন্ধ্যের পরে সাধারণত কেউ যায় না। তেমন একটি এলাকায় রাতের বেলায় যুবতীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পিন্টু নিয়ে গিয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযোগ, সেই সময় দুটি বাইকে চেপে ৫ জন যুবক তাদের পথ আটকে রাস্তা থেকে গঙ্গার ধারে নিয়ে যায়। সেখানে তিন জন মিলে তার প্রেমিক পিন্টুকে ধরে রাখে বলে অভিযোগ। এরপর পরপর ৫ জন মিলে ওই যুবতীকে গনধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এরপরে শনিবার সন্ধ্যেয় ওই যুবতী লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই পুলিশ প্রেমিক ও অভিযুক্ত বদিরুদ্দিনকে ধরেছে।

সরকারি আইনজীবী উত্‌পল রায় জানিয়েছেন, ধৃতদের ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন