খানিক আরাম শিলিগুড়িতে। জলপাইগুড়িতে অসুস্থ ছাত্রীরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ থেকে তৈরি হওয়া সাইক্লোনের জেরে বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গে।
বৃহস্পতিবার বেশ কিছুটা সময় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। গত বুধবারের থেকে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমলেও, এ দিনও দাবদাহ অব্যাহত ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৭ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের থেকে অন্তত ৫ ডিগ্রি বেশি। গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। যা গত দু’দশকের নিরিখে সর্বাধিক বলে জানা যাচ্ছে। এ দিন শিলিগুড়ির তাপমাত্রাও ৩৬ ডিগ্রির আশেপাশেই ওঠানামা করেছে। দিনের মতো রাতের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে কয়েক ডিগ্রি বেশি ছিল।
আবহাওয়া দফতরের প্রকাশিত বুলেটিনে অবশ্য বৃষ্টির পুর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের উপর ঘনীভূত নিম্নচাপ ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হয়ে সমতলে আছড়ে পড়ার ফলে উত্তরবঙ্গও বৃষ্টি পেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সাইক্লোন আছরে পড়ার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নিম্নচাপ ক্ষেত্র তৈরি হয়। তার প্রভাবেই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি আশা করা যাচ্ছে।’’ এ দিন কোচবিহারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৩৬ ডিগ্রির বেশি ছিল।
তবে গরমে কারণে অসুস্থতা বেড়েই চলেছে দুই শহরে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি দুই শহরেই হাসপাতালে রোগীদের ভিড় দেখা গিয়েছে এ দিনও। গরমে অসুস্থতার ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ির সুনীতিবালা সদর বালিকা বিদ্যালয়েও। স্কুলে গত দু’ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই বলে অভিযোগ। দু’দিনে শিক্ষিকা এবং ছাত্রীদের কয়েকজন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে। পানীয় জলেরও সমস্যা চলছে বলে অভিযোগ। পুরসভার থেকে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হচ্ছে স্কুলে। সমাজপাড়া এলাকায় পঞ্চানন বর্মার মূর্তি বসিয়েছে পুরসভায় আগামী সপ্তাহে মূর্তি উন্মোচনের কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মূর্তি বসানোয় এলাকার বিদ্যুতের তারগুলি পরিবর্তনের কাজ চলছে। সে কারণেই স্কুলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাতেই দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষিকা, ছাত্রী সহ স্কুলের কর্মীরা।
গত বুধবার স্কুল চলাকালীন তিন জন এবং বৃহস্পতিবার দুজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার দুজন শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিদ্যুৎ না থাকায় স্কুলের নিজস্ব পাম্পসেট চলেনি, তাই পানীয় জল সরবরাহও বিপর্যস্ত। প্রধান শিক্ষিকা অপর্ণা বাগচী বলেন, “স্কুলে দু’দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেকথা রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের অফিস থেকে আমাদের জানানো উচিৎ ছিল। আচমকা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি।”
যদিও, রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার গোবিন্দ তালুকদার বলেন, “জলপাইগুড়ির সমাজপাড়া এলাকায় দু’দিন দিনের বেলা বিদ্যুৎ থাকবে না তা মাইকে ঘোষণা করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।”