ঘর পুড়িয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা, নালিশ

ঘরে আগুন দিয়ে তিনটি আদিবাসী পরিবার পরিবার উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূল সমর্থকদের একাংশের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেল নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগান সংলগ্ন কারজিপাড়া এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিকারপুর (জলপাইগুড়ি) শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৪
Share:

জলপাইগুড়ির শিকারপুরে পুড়ল ঘর।

ঘরে আগুন দিয়ে তিনটি আদিবাসী পরিবার পরিবার উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূল সমর্থকদের একাংশের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেল নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগান সংলগ্ন কারজিপাড়া এলাকায়।

Advertisement

ওই ঘটনাকে ঘিরে এলাকার আদিবাসী সমাজে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদ নেতৃত্বের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের মদতে পুলিশের সাহায্য নিয়ে দলের সমর্থকরা আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে জমি দখল করার ষড়যন্ত্র করেছে। যদিও বিধায়ক ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিকাশ পরিষদ নেতৃত্ব জানান, এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত গৃহহীনরা ঘরের আধ পোড়া সামগ্রী অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকায় থানায় যেতে পারেনি। আজ, বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন।

এদিকে বিকাশ পরিষদ নেতৃত্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে রাজগঞ্জ ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিক কৌশিক মল্লিক বলেন, “জমির মালিকানা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।”

এদিকে পুলিশের উপস্থিতিতে আদিবাসীদের ঘর পোড়ানর অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল। তিনি বলেন, “পুলিশ কেন ঘর পোড়াতে যাবে! অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” একই ভাবে জমি দখলের জন্য দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তোলা আদিবাসী পরিবারের তিনটি বাড়ি পোড়ানর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “আমাদের ছেলেদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। ভূমি রাজস্ব দফতর তদন্ত করছে তদন্তে যে রিপোর্ট বার হবে সেটা কার্যকরী করার জন্য দল সাহায্য করবে।”

তবে বিধায়ক, জেলা পুলিশ কর্তা এবং তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি মানতে নারাজ তালমা নদী লাগোয়া কারজিপাড়ার আদিবাসী বাসিন্দারা। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজু সাহানি জানান, ১৯৭১ সাল থেকে প্রায় চার একর জমিতে চাষ আবাদ করতেন মোহর ওঁরাও। তিনি ২০০৩ সালে মারা গেলে তাঁর চার মেয়ে পার্বতী ওঁরাও, সরস্বতী ওঁরাও, মহালক্ষ্মী ওঁরাও, রুবিনা ওঁরাও এবং ভাই দুর্গা ওঁরাও জমির মালিক হন। তিন বোন ও ভাই জমিতে তিনটি চালা ঘরে বসবাস করেন। সেখানে চাষ আবাদ করতেন রাজু। পার্বতী ওঁরাও অভিযোগ করেন, “বুধবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের দরমার দেড়া দেওয়া টিনের চালা ঘর ভেঙে গুড়িয়ে আগুন দেয়। পুলিশ মারধরের ভয় দেখায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন