চায়ের দোকানে মদ

চাঁচলে স্কুল লাগোয়া ঠেক ভাঙলেন মহিলারা

স্কুলের গা লাগোয়া চায়ের দোকানে সকাল থেকে রাত রমরমিয়ে চলছিল মদের ঠেক। মদ খেয়ে স্কুলের সামনে এমনকী শ্রেণিকক্ষেও মাঝেমধ্যে খালি বোতল ফেলে রাখা হত। মদ্যপদের ভয়ে পড়ুয়াদের পাশাপাশি তটস্থ ছিলেন মহিলারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৭
Share:

স্কুলের গা লাগোয়া চায়ের দোকানে সকাল থেকে রাত রমরমিয়ে চলছিল মদের ঠেক। মদ খেয়ে স্কুলের সামনে এমনকী শ্রেণিকক্ষেও মাঝেমধ্যে খালি বোতল ফেলে রাখা হত। মদ্যপদের ভয়ে পড়ুয়াদের পাশাপাশি তটস্থ ছিলেন মহিলারাও। সন্ধ্যায় মহিলারা রাস্তায় বেরতে ভয় পেতেন। পরিস্থিতির কথা কয়েক বার পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি। অবশেষে লাঠিসোটা নিয়ে ঠেক ভাঙার অভিযানে নামলেন মহিলারা। ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন চায়ের দোকানের আড়ালে চলতে থাকা মদের ঠেক সহ মদের বোতল। রবিবার মালদহের রতুয়া থানার সামসি লাগোয়া ভগবানপুর গ্রামতলায় ঘটনাটি ঘটেছে। মারমুখী মহিলাদের দেখে তাঁদের বাধা দেওয়ার সাহস পাননি ঠেক মালিক। সপরিবারে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে তিনি গা ঢাকা দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

রতুয়ার ওসি রাজু খোন্দকারের অবশ্য দাবি, “প্রাথমিক স্কুলের গায়ে এ ভাবে মদের ঠেক চলার বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আর কোনও ঠেক থাকলে সামসি ফাঁড়িকে ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। ওই ঠেক মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”

পুলিশ ও বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে ভগবানপুর সিএস প্রাথমিক স্কুলের পাশে চায়ের দোকান খোলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। কিন্তু কিছুদিন বাদেই সেখানে তিনি মদের কারবার চালু করেন বলে অভিযোগ। প্রথমে গোপনে কারবার চালালেও দু’বছর ধরে প্রকাশ্যেই সেখানে ঠেক বসা শুরু হয়। শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশই নন, লাগোয়া এলাকাগুলি থেকেও মদ্যপরা ঠেকে ভিড় জমতে শুরু করেন। বাসিন্দারা জানান, প্রতি দিন ঠেকটি রাত ১২টা পর্যন্ত রমরমিয়ে চলতে থাকায় রাতে সেখানে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা শুরু হয়। এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। গ্রামের অনেক যুবকই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন। বহু পরিবারেই অশান্তি নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়ায়। স্কুলের কচিকাঁচারা ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত। কিন্তু স্কুলের পাশাপাশি বাসিন্দাদের একাংশ বারবার ঠেকটি বন্ধ করার দাবি জানালেও তা ওই দোকানদার শোনেননি। উল্টে প্রতিবাদ করায় ঠেক মালিক ও সঙ্গীরা বাসিন্দাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিত বলে অভিযোগ।

Advertisement

সম্প্রতি মদ্যপদের তাণ্ডব এতটাই বেড়ে গিয়েছিল, যে বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। এরপর এলাকার মহিলারাই শনিবার রাতে সভা ডেকে ঠেক বন্ধ করা সিদ্ধান্ত নেন। এদিন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় মদের ঠেকটি। এলাকার অর্চনা ঘোষ, বাসনা সরকার বলেন, “এলাকার পরিবেশটাই নষ্ট হতে বসেছিল। পুলিশ ব্যবস্থা নিতে না পারায় আমরাই ঠেক ভেঙে দিয়েছি। আবার খুললে ফের তা ভাঙা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement