চা দিবসে মজুরি বাড়ানোর দাবি

১৫ ডিসেম্বর, সোমবার আন্তর্জাতিক চা দিবসের দিন দাবি উঠল শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির। সোমবার ডুয়ার্সের বানারহাটের মরাঘাট চা বাগানে এ বছরের চা দিবস উদ্‌যাপন হয়। সেখানে কয়েকটি চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা-সহ চা শ্রমিক গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তারা মূলত ভারতের অন্য সব রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের চা শ্রমিকদের তুলনা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বানারহাট শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

১৫ ডিসেম্বর, সোমবার আন্তর্জাতিক চা দিবসের দিন দাবি উঠল শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির। সোমবার ডুয়ার্সের বানারহাটের মরাঘাট চা বাগানে এ বছরের চা দিবস উদ্‌যাপন হয়। সেখানে কয়েকটি চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা-সহ চা শ্রমিক গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তারা মূলত ভারতের অন্য সব রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের চা শ্রমিকদের তুলনা করেন। তাঁরা জানান, কেরলে চা শ্রমিকরা দৈনিক ২২০ টাকা, তামিলনাড়ুতে দৈনিক ২১৬ টাকা মজুরি পান। কেরলে শ্রমিকদের ১টাকা কিলো দরে চাল, গমও দেওয়া হয়। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে শ্রমিকেরা অর্ধেকেরও কম মজুরি পাচ্ছেন।

Advertisement

এই রাজ্যের চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর ক্ষেত্রে মালিকদের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ করেছেন বেশিরভাগ বক্তাই। দৈনিক মাত্র ৯৫ টাকা মজুরিতে সংসার চলছে শ্রমিকদের। বহু শ্রমিক বাগান ছেড়ে কেরলে গিয়ে বেশি মজুরিতে দিনমজুরি করছেন। বাগানগুলিতে ধীরে ধীরে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। রাজ্যগুলির মধ্যে বেতন বৈষম্য দূর করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে জাতীয় বেতন বোর্ড গঠন করার পাশাপাশি পরিবর্তনশীল মহার্ঘ্য ভাতা চালুর দাবি উঠেছে চা দিবসের মঞ্চ থেকে।

বানারহাট-সহ ডুয়ার্সের বহু বাগান থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এ দিন চা দিবস উদ্‌যাাপন করতে মরাঘাট চা বাগানে আসেন। দিনভর চা শ্রমিকদের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। আন্তর্জাতিক চা দিবস কমিটির ভারতের আহ্বায়ক অশোক ঘোষ বলেন, “বাগান শ্রমিকদের মাসে অন্তত দশ হাজার টাকা ন্যূনতম বেতনের দাবি করেছি আমরা। সেক্ষেত্রে মালিক পক্ষ যে রেশন দিয়ে থাকেন, তা না দিলেও চলবে। বন্ধ বাগানগুলির শ্রমিকদের পাশে সরকার যাতে দাঁড়ায়, আমরা সেই দাবি তুলছি।”

Advertisement

বহু বাগানের হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিত্‌সক নেই, নিয়মিত রেশন দেওয়া হয় না। অথচ এক শ্রেণির ব্যবসায়ী চা বাগান কিনে সেখান থেকে যা লাভ করছেন, তা দিয়ে অন্য ব্যবসা চালাচ্ছেন। শ্রমিক নেতাদের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন জেতা সংকৃত্যায়ণ-সহ দিল্লির সেন্টার ফর এডুকেশনের প্রতিনিধি কৌস্তভ রায় চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। চা বাগনগুলিতে স্থায়ী শ্রমিকের বদলে ঠিকা শ্রমিক নেওয়ার প্রতিবাদ করা হয়।

এ দিন চোপড়ার টি প্ল্যান্টার্স ফোরামও চা দিবস পালন করেন। বাসিন্দাদের বিনামূল্যে চা খাওয়ান তাঁরা। চোপড়া বাজার এলাকাতে সেই অনুষ্ঠান হয়।

প্রতারণার দাবি তৃণমূলের। নোটিশ না দিয়ে চা বাগান ফেলে চলে যাওয়ার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ জানাবে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন। আজ, মঙ্গলবার শামুকতলা থানায় রহিমাবাদ চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ রুজু করবে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী জানান, “জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় আটটি বাগান বন্ধ আছে। অর্থলগ্নি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হলে সিবিআই প্রতারণার মামলা রুজু করে। নোটিস না দিয়ে শ্রমিকের জীবন বিপন্ন করে পালিয়ে যাওয়া মালিকদের বিরুদ্ধে কেন প্রতারণার মামলা করবে না পুলিশ?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন