চা পাতা বিক্রিতে সেস ছাড়ের প্রস্তাব

কাঁচা চা পাতা বিক্রির উপরে সেস এবং লভ্যাংশের উপরে কৃষি আয়কর ছাড়ের বাজেট প্রস্তাবকে স্বাগত জানাল চা শিল্প মহল। শুক্রবার পেশ হওয়া রাজ্য বাজেটে চা শিল্পের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন চা সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে। যেমন, কাঁচা চা পাতা বিক্রির জন্য প্রতি কেজিতে ১২ পয়সা সেস দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০২
Share:

কাঁচা চা পাতা বিক্রির উপরে সেস এবং লভ্যাংশের উপরে কৃষি আয়কর ছাড়ের বাজেট প্রস্তাবকে স্বাগত জানাল চা শিল্প মহল। শুক্রবার পেশ হওয়া রাজ্য বাজেটে চা শিল্পের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন চা সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে। যেমন, কাঁচা চা পাতা বিক্রির জন্য প্রতি কেজিতে ১২ পয়সা সেস দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এবারের বাজেটে ১ বছরের জন্য ওই সেস মকুব করা হয়েছে। গত তিন বছর ধরেই এই সেস মকুব করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে চা শিল্পে লভ্যাংশের উপরে নূন্যতম ৩০ শতাংশ হারে যে কৃষি আয়কর দেওয়া হতো, তাও আগামী এক বছরের জন্য মকুব করার প্রস্তাব রাজ্য বাজেটে রয়েছে বলে চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে এ চা শিল্পের পরিকাঠামো উন্নতির জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরির ঘোষণাও করেছে রাজ্য সরকার। এ দিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন।

Advertisement

বণিকসভা সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ শাখার চেয়ারম্যান প্রবীর শীল বলেন, “চা শিল্পের ক্ষেত্রে কৃষি আয়কর মকুব করার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছি। বকেয়া কর পরিশোধের জন্য ৫ বছরের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, তাও আশাব্যাঞ্জক। সব মিলিয়ে চা শিল্পের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ভাল প্রস্তাব বাজেটে রয়েছে।” সেই সার্বিক শিল্পক্ষেত্রে এ বারের বাজেটে প্রমোদ কর, ভ্যাটের কিছু সীমা এবং হার বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে বাজেটে। সেই প্রসঙ্গে প্রবীরবাবু বলেন, “করের হার কয়েকটি ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে, তবে তা যেন সাধারণ বাসিন্দাদের উপর চাপ না বাড়ায় তা দেখতে হবে।”চা শিল্পের কয়েকটি ক্ষেত্রে কর মকুবের আর্জি জানিয়ে চলতি মাসেই আর্জি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছিল বলে উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। সেই মতো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আশ্বাস মিলেছে বলে দাবি করেছেন ক্ষুদ্র চা চাষিদের সবর্ভারতীয় সংগঠন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা দাবিদাওয়া জানানো হয়েছিল। এ বারের বাজেট প্রস্তাবের আগেও আমরা স্মারকলিপি পাঠিয়েছিলাম। কর ছাড় পাওয়ায় ক্ষুদ্র চা চাষিরা উপকৃত হবেন।” স্বাগত জানিয়েছে বড় চা বাগানের মালিক সংগঠনও। টাই-এর মহাসচিব প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, “কর ছাড়ের ঘোষণায় সব ধরণের চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা বা ব্যক্তিরাও লাভবান হবেন। তার ফলে শ্রমিকরাও উপকৃত হবেন।” অন্যদিকে, চা শিল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দ করায় রুগ্ন এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানের পুনরুজ্জীবন সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মন্ত্রী গৌতমবাবুর কথায়, “রাজ্য সরকার যে চা শিল্পের জন্য অদ্রাধিকার দিচ্ছে, তা এবারের বাজেটে ফের প্রমাণ হল।” চা শ্রমিকদের ২৪টি সংগঠন নিয়ে তৈরি যৌথ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক জিয়াউল আলম বলেন, “চা শ্রমিকদের প্রাপ্য সুবিধে মালিক বা রাজ্য সরকার কেউ দিতে চাইছে না। সে কারণেই সব সংগঠন এক হয়ে মঞ্চ তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তা যদি বুঝে থাকেন তা ভাল। বন্ধ বাগানের ক্ষেত্রে কোনও ঘোষণা এখনও শুনিনি। আশা করি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সে বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন