তিন শিশুকন্যাকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় কেউই এখনও ধরা পড়েনি। ঘটনার চার দিন বাদেও পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে না পারায় পরিজনদের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। এমনকী, অভিযুক্তরা ধরা না পড়ায় কচিকাঁচাদের নিরাপত্তা নিয়েও আতঙ্কে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা।
পুলিশের অবশ্য দাবি, তারা তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তে নেমে অভিযুক্তরা বিহারের বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার পরেই তারা কাটিহারগামী ট্রেনে চেপে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারেও বলে সন্দেহ পুলিশের। বিহার থেকে কোন দুষ্কৃতীরা চাঁচল বা মালদহে এসে অপরাধমূলক কাজকর্ম করে, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশের দাবি। চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুই অভিযুক্ত সম্পর্কে ওই শিশুকন্যাদের কাছ থেকে যেটুকু বয়ান মিলেছে তা নিয়েই তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের যাতে চিহ্নিত করা যায় সে জন্য সবরকম চেষ্টাই চলছে। অভিযুক্তদের বিহারের বলে মনে হলেও স্থানীয় কেউ ওই ঘটনায় জড়িত কি না সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
তবে ঘটনার এতদিন পরেই একজনও গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পর বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা আমাকেও অনেকে ফোন করে জানিয়েছেন। তাই কারা ছিল, কারা থাকতে পারে সে সব সম্ভাবনার কথা না বলে পুলিশ কাজ করে দেখাক।’’ বুধবার সন্ধেয় রোজকার মতো টিউশন নিতে যাওয়ার সময় স্টেশন কুলিপাড়ার প্রিয়া, কৃপা ও ক্যাটরিনা চৌধুরীকে দুই দুষ্কৃতী অপহরণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। খুনের হুমকি দিয়ে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের নীচে পুকুরের ধারে একটি মাচায় হাত বেঁধে তাদের অন্ধকারে বসিয়ে রাখা হয়। সেখানেই বইয়ের ব্যাগ থেকে পেন্সিল কাটার ব্লেড দিয়ে প্রথমে নিজের ও পরে দুই বান্ধবীর হাতের বাঁধন কেটে মুক্ত করার পর তারা পালিয়ে যায়।
শেষপর্য়ন্ত দুষ্কৃতীরা তাদের ধরতে না পারলেও চার দিনেও দুই দুষ্কৃতীর কোনও হদিশ না মেলায় ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত পরিজনেরা। উদ্বেগে স্থানীয় বাসিন্দারাও। প্রিয়ার বাবা কেদার চৌধুরী, কৃপার বাবা ভোলা চৌধুরী এ দিনও বলেন, ‘‘মেয়েরা আপাতত স্বাভাবিক। কিন্তু অভিযুক্তরা ধরা না পড়া পর্যন্ত আমাদের মন থেকে আতঙ্ক দূর হচ্ছে না।’’ সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অজয় শর্মাও বলেন, ‘‘যা ঘটতে যাচ্ছিল ভাবতেই ভয় লাগছে। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরুক। যা ঘটেছে তাতে বাসিন্দাদেরও সচেতন থাকতে হবে।’’ এপিডিআরের মালদহ জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা ওদের পাশে আছি। গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছি। পুলিশ কিছু না করলে পথে নামব।’’