পানিশালায় নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাসে জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।
রবিবার কোচবিহারে চারটি প্রকল্পের শিলান্যাস হল। এ দিন সকালে জেলার শিশবগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে প্রায় ২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ও পানিশালায় নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। বিকেলে দিনহাটার ওকরাবাড়ি ও গীতালদহ এলাকায় দুটি ছাত্রাবাসের শিলান্যাস হয়েছে। রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করেছেন।
আমতলা থেকে শিশবগুড়িগামী রাস্তার জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ। পানিশালায় পানীয় জল প্রকল্পের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। চিলাখানা-নাটবাড়ি রাস্তা আড়াই মিটার চওড়া করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭ কোটির কিছু বেশি। নাটাবাড়ি-মাল্লিখোলা রাস্তা সম্প্রসারণে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। যুব কল্যাণ দফতরের দেওয়া এই বরাদ্দে রাজবাড়ি স্টেডিয়াম চত্বরে ১১০ শয্যার যুব আবাস নির্মাণে খরচ হবে ৫ কোটি টাকা। জেলা জুড়ে পরপর বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে লোকসভা ভোটের মুখে যুযুধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের চাপান উতোর শুরু হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চানন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন নির্মাণ না হওয়া, চালুর পরে কোচবিহারে উড়ান পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়া নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। সে কারণেই লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল নানা প্রকল্প শিলান্যাস করে বাসিন্দাদের মন জয়ের চেষ্টা শুরু করেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “শিলান্যাসের নামে বাসিন্দাদের চমক দিচ্ছে তৃণমূল। ওরা যে কাজের কাজ কিছু করছে না তার বড় প্রমাণ উড়ান চালু হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া। দুই বছরেও পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। শিলান্যাসকে হাতিয়ার করে লোকসভা ভোটে লাভ হবে না।” ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “মুখে মানুষের মন জিতে নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তৃণমূল আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। রোজ শিলান্যাস করে ভাওঁতা দিতে হচ্ছে।”
শনিবার মাথাভাঙার লতাপোতায় পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। ওই দিন তুফানগঞ্জ দেওচড়াইয়ে ছাত্রাবাস ও ধলপলে রাস্তা তৈরির কাজের শিলান্যাস হয়েছে। গত এক সপ্তাহে জেলায় ৬২ প্রকল্পের শিলান্যাস হয় বলে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের তরফে লোকসভা ভোটের সঙ্গে শিলান্যাসের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, “বামেদের মত আমরা শুধু শিলান্যাস করি না, সব প্রকল্পেরই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। হতাশা থেকে বামেরা এই সমালোচনা করছে।” তৃণমূলের দাবি, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবনের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্যও বাড়ানো হয়েছে।