চাষে আগ্রহ বাড়াতে গ্রাম দত্তকের সিদ্ধান্ত

বন নির্ভরতা কাটিয়ে চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে গ্রাম ‘দত্তক’ নেওয়ার উদ্যোগ নিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে আলিপুরদুয়ারের উত্তর চকোয়াখেতি গ্রামে ওই কাজ শুরু হচ্ছে। আজ শনিবার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন। শুক্রবার প্রস্তাবিত প্রকল্প উদ্বোধনের কাজ তদারকি করতে ওই গ্রাম সরেজমিনে ঘুরে দেখেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২৯
Share:

বন নির্ভরতা কাটিয়ে চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে গ্রাম ‘দত্তক’ নেওয়ার উদ্যোগ নিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে আলিপুরদুয়ারের উত্তর চকোয়াখেতি গ্রামে ওই কাজ শুরু হচ্ছে। আজ শনিবার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন। শুক্রবার প্রস্তাবিত প্রকল্প উদ্বোধনের কাজ তদারকি করতে ওই গ্রাম সরেজমিনে ঘুরে দেখেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক সমীক্ষার পর ওই গ্রামটিকে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতেও অন্তত একটি করে গ্রাম ওই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হবে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “সবুজ রক্ষার ভাবনাতেই বিকল্প উপায়ে বাসিন্দাদের কৃষি নির্ভরতা বাড়িয়ে তাঁদের আর্থিকভাবে সাবলম্বী করে তুলতে গ্রাম পুনর্গঠনের পরিকল্পনা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার উত্তর চকোয়াখেতি গ্রামটি চিলাপাতা জঙ্গল লাগোয়া। ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী ওই গ্রামের জনসংখ্যা ১৩৯৯ জন। মোট পরিবারের সংখ্যা ২৭১। বাসিন্দাদের অর্ধেকের বেশি দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ তপশিলি জাতি কিংবা উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত। গ্রামের একটি চা বাগান বন্ধ। ফলে কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে গিয়েছেন শতাধিক শ্রমিক। বাকিদের একাংশ জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে জ্বালানি সংগ্রহ কিংবা বিক্রি, কালজানি নদী থেকে বালি-পাথর তুলে বিক্রির মতো কাজ করে রুটিরুজির সংস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন।

Advertisement

অথচ প্রায় প্রত্যেকের অল্পবিস্তর আবাদি জমি রয়েছে, বাড়ির চৌহদ্দিতেও পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেভাবে কৃষিকাজের ব্যাপারে আগ্রহ নেই কারোই। বর্ষার সময় ধান ছাড়া অন্য কোনও চাষ করেননা। অথচ ওই জমি লিজ নিয়ে বাইরের লোকেরা আলু সহ নানা সবজি চাষ করছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি সমীক্ষা করেই উত্তর চকোয়াখেতি গ্রামের নাম চূড়ান্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রধান প্রভাত কুমার পাল। তিনি বলেন, “সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক করা গেলে কয়েক বছরে মধ্যে গ্রামের অর্থনৈতিক ছবিটাই বদলে দেওয়া যাবে বলে আশা করছি।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ওই গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার হাল ফেরাতে আধুনিক চাষাবাদ নিয়ে প্রশিক্ষণ, বাড়ির উঠোনে কিচেন গার্ডেন তৈরির মত কাজের পাশাপাশি জোর দেওয়া হয়েছে মাশরুম চাষ, মৌমাছি প্রতিপালনের মত বিকল্প ভাবনায়। চকোয়াখেতি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাশেরাম মুন্ডা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা খুশি। ঠিকঠাক কাজ হলে চাষাবাদ বাড়বে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন