রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ

ছাত্র সংসদে টিএমসিপি, মামলা করার হুমকি দিল এসএফআই

সরকারিভাবে রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের দখল নিল টিএমসিপি। সোমবার কলেজের ছাত্র সংসদের বিভিন্ন শূন্যপদ পূরণ করতে বৈঠক ডেকেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সংসদের এক্সিকিউটিভ বডির সদস্যরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের ডাকা ওই বৈঠককে অবশ্য বেআইনি বলে দাবি করে আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়েছে এসএফআই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪১
Share:

সরকারিভাবে রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের দখল নিল টিএমসিপি। সোমবার কলেজের ছাত্র সংসদের বিভিন্ন শূন্যপদ পূরণ করতে বৈঠক ডেকেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সংসদের এক্সিকিউটিভ বডির সদস্যরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের ডাকা ওই বৈঠককে অবশ্য বেআইনি বলে দাবি করে আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়েছে এসএফআই।

Advertisement

সংগঠনের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকারের দাবি, “তাঁদের আইনজীবীর নোটিশ উপেক্ষা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ এদিন বেআইনিভাবে বৈঠক করে টিএমসিপিকে ছাত্র সংসদ উপহার দিয়েছেন।” যদিও কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীরবাবুর দাবি, তিনি আইনজীবীর কোনও নোটিশ হাতে পাননি। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই ছাত্র সংসদের শূন্যপদ পূরণ করা হয়েছে।

কলেজ সূত্রের খবর, গত জানুয়ারি মাসে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়। মোট ৪১ আসনের মধ্যে ৪০টি আসনে জয়ী হয়ে ছাত্র সংসদ দখল করে এসএফআই। একটি আসন টিএমসিপির দখলে যায়। টিএমসিপির দাবি, দু’মাস আগে ছাত্র সংসদে এসএফআইয়ের ২৪ জন সদস্য টিএমসিপিতে যোগ দেন। এই পরিস্থিতিতে টিএমসিপির সদস্য সংখ্যা ২৫ ও এসএফআইয়ের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬তে। ছাত্র সংসদে টিএমসিপি অনাস্থা আনতে পারে এরকম আশঙ্কাতে আদালতের দ্বারস্থ হয় এসএফআই। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অনাস্থার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে রায়গঞ্জ জেলা আদালত। তাই পরবর্তীতে টিএমসিপি অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও তা গ্রহণ করেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এরই মধ্যে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সহ এসএফআইয়ের ৮ জন ও টিএমসিপির ১৩ জন সদস্য বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে থাকার বৈধতা হারান। এরফলে সংসদে একাধিক পদ শূন্য হয়ে যায়। কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীরবাবু জানান, গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ইউনিয়ন রুলস এন্ড রেগুলেশন ২০০৭ অনুযায়ী যদি কোনও কারণে ছাত্র সংসদের কোনও পদাধিকারী অকৃতকার্য হয়, অথবা অনুপস্থিত থাকে বা কলেজে পড়া ছেড়ে দেয়, তবে সে ক্ষেত্রে ছাত্র সংসদের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে উপনির্বাচন করে শূন্যপদ পূরণ করার বিধি রয়েছে। তিনি বলেন, “কলেজ পরিচালনার কাজ সহ কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া ও সাধারণ পড়ুয়াদের উন্নয়নের স্বার্থেই শূন্যপদগুলি পূরণ করা হল।”

টিএমসিপির ১১ জন সদস্য এদিনের বৈঠকে হাজির হলেও এসএফআইয়ের কোনও সদস্য উপস্থিত ছিলেননা। বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের সমর্থনে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র টিএমসিপির তিতুন দাস। সংসদের বাকি ১৩টি পদের মধ্যে ৯টি পদ টিএমসিপি দখল করেছে। বয়েজ কমনরুমের সহকারি সম্পাদকের পদে কাউকে পাওয়া যায়নি। সহকারি সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও গার্লস কমনরুমের সহকারি সম্পাদকের পদ অবশ্য এসএফআইয়ের দখলেই রয়েছে। এই বৈঠককে বেআইনী বলে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন এসএফআই এর জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার। টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয় সরকারের দাবি, “ছাত্র সংসদের একাধিক পদ শূন্য হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ছিলেন সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা। এবার তার সমাধান করা সম্ভব হল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন