গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লিতে আন্দোলন চালানোর জন্য প্রত্যেক নির্বাচিত গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) সদস্যকে দু’মাসের বেতন দলের তহবিলে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সোমবার দার্জিলিঙের ভানুভবনে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গও উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। পরে দলের ওই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। তিনি বলেন, “এদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে প্রত্যেক জিটিএ সদস্য দিল্লির আন্দোলনের জন্য দু’মাসের বেতন দলের তহবিলে জমা দেবেন।”
মোর্চা সূত্রের খবর, চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শেষে এবং ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় দিল্লিতে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে মোর্চা। দিল্লির যন্ত্ররমন্ত্রর-এ দু’দিন ধর্না বিক্ষোভ হবে। পাশাপাশি, একদিন দিল্লিতে জনসভা হবে। তবে সভার জায়গা এখনও ঠিক হয়নি। সেই সঙ্গে দলের পরবর্তী বৈঠকে ধর্নার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। উল্লেখ্য, অনেকদিন আগেই মোর্চার তরফে দিল্লিতে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানান, আলাদা রাজ্য তৈরি অধিকার বা দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রই পারে রাজ্য গঠন করতে। তাই দিল্লিতে বসেই আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাহাড়ের মানুষের দাবি তুলে ধরব। রোশন গিরি জানান, আমরা কর্মসূচির দিনক্ষণ পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করে দেব। আর কর্মসূচিতে পাহাড় এবং গোটা দেশ থেকে ১০ হাজার গোর্খারা দিল্লিতে জমায়েত করবেন।
জিটিএ সূত্রের খবর, নির্বাচিত জিটিএ-র সদস্য সংখ্যা ৪৫। এরা সকলেই মোর্চার সদস্য। এরমধ্যে জিটিএ চিফ হিসাবে বিমল গুরুঙ্গ ৫০ হাজার টাকা মাসে বেতন পান। ডেপুটি চিফ পান ৪৫ হাজার টাকা। জিটিএ সভার চেয়ারম্যান ৪০ হাজার এবং ডেপুটি চেয়ারম্যান ৩৫ হাজার টাকা মাসে বেতন পান। ১৪ জনের জিটিএ কার্যনির্বাহী সদস্যের মধ্যে উপরের চারজন ছাড়া বাকিরা ৩০ হাজার টাকা করে মাসে বেতন পাচ্ছেন। বাকি ৩১ জন জিটিএ নির্বাচিত সদস্য মাসে ২৫ হাজার টাকা করে বেতন নেন। এদের সকলকেই আন্দোলনের আগে দুই মাসের বেতন দলে জমা দিতে বলা হয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা দু’মাসের কথা বলেছি। তবে নির্দিষ্ট করে কোনও মাসের কথা বলছি না। কর্মসূচির আগে তিনমাস সময় রয়েছে। দু’মাসের বেতন দিলেই হবে।”
রোশন জানান, এ দিনের বৈঠকে দলকে আরও মজবুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরজন্য সমস্ত টাউন কমিটি আপাতত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মহকুমা কমিটিগুলিই টাউন কমিটির আপাতত কাজ দেখভাল করবে। পরবর্তীতে টাউন কমিটি তৈরি হবে। সেই সঙ্গে কোনও সদস্য পরপর তিনবার কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে গরহাজির হলে, তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হবে। উল্লেখ্য, মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ৯৬। দলের তরফে এদিন জানানো হয়েছে, আগামী ৭ অক্টোবর দলের সপ্তম প্রতিষ্ঠা দিবসে দার্জিলিঙে বড়মাপের অনুষ্ঠান হবে। কার্শিয়াং এবং কালিম্পঙেও অনুষ্ঠান হলে মূল অনুষ্ঠানটি হবে শৈলশহরেই।