জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু, বাসে আগুন

বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল ভুটভুটি চালকের। বাসে আগুন লেগে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়াল জাতীয় সড়কে। তারই জেরে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকল প্রায় দেড় ঘন্টা। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার নাকোল এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৫
Share:

করণদিঘির নাকোলে জাতীয় সড়কে জ্বলছে বাস।—নিজস্ব চিত্র।

বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল ভুটভুটি চালকের। বাসে আগুন লেগে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়াল জাতীয় সড়কে। তারই জেরে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকল প্রায় দেড় ঘন্টা। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার নাকোল এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম ভোলা কর্মকার (৩৫)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় আলতাপুর এলাকায়। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ভুটভুটির দুই যাত্রীও। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পর জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় এক ঘন্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশের আশ্বাসে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বাসিন্দাদের দাবি, ওই এলাকায় জাতীয় সড়ক বেহাল থাকার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “বাস ও ভুটভুটির মুখোমুখি সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে বাসে আগুন লেগেছে, নাকি কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।”

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এদিন করণদিঘির বোতলবাড়ি এলাকা থেকে চালক সহ তিনজন যুবক ভুটভুটিতে কাঠবোঝাই করে আলতাপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় নাকোল এলাকায় শিলিগুড়ি থেকে রায়গঞ্জগামী একটি বেসরকারি বাসের সঙ্গে ভুটভুটিটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই ভুটভুটি থেকে তিনজন রাস্তার উপর ছিটকে পড়েন। দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও কনডাক্টার পালিয়ে যান। যাত্রীরাও আতঙ্কে গাড়ি থেকে নেমে অন্যত্র সরে যান। দুর্ঘটনায় ভুটভুটির চালক ভোলাবাবু ঘটনাস্থলে মারা যান। বাসিন্দারা বাকিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সংঘর্ষের পর ভুটভুটিটির একাংশ বাসের নিচে ঢুকে পড়ার পরেই দুটি গাড়িতে আগুন লেগে যায়।

খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে জাতীয় সড়কের উপর দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাস ও ভুটভুটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকায় আতঙ্কে জাতীয় সড়কের দুইপ্রান্তের বাস ও ট্রাকের চালকেরা নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন। ফলে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়! খবর পেয়ে পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে জাতীয় সড়ক বেহাল থাকার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করে রাস্তা মেরামতির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ শুরু করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। তবে দুর্ঘটনার পর বাসিন্দাদের একাংশ ওই বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় কি না তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

Advertisement

ওই বাসে স্ত্রী ও ছ’বছরের মেয়েকে নিয়ে ডালখোলায় আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রায়গঞ্জে ফিরছিলেন সাঁওতালপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় গৃহশিক্ষক বিপ্লব দে। তাঁর ভাই নয়ন দেব বলেন, “দুর্ঘটনার পর আতঙ্কে বাসের যাত্রীরা চিত্‌কার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। প্রাণ বাঁচাতে হুঁড়োহুড়ি করে নামার সময় অনেক যাত্রী পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন।” বাসের যাত্রীরা এরপর প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে বোতলবাড়ি মোড়ে গিয়ে রায়গঞ্জগামী ট্রেকার ধরেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন