জামিনে মুক্ত ব্যবসায়ীর অপমৃত্যুতে পুলিশের নামে নালিশ

এক ব্যবসায়ীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে। নিরপরাধ হয়েও পুলিশের মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই ব্যক্তি বলে অভিযোগ তাঁর বাড়ির লোকের। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জের পানিকৌড়ি এলাকায়। মৃতের নাম মৃত্যুঞ্জয় সরকার (৩৫)। পেশায় পুরোনো লোহা লক্কড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৪ ০৪:৫১
Share:

এক ব্যবসায়ীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে। নিরপরাধ হয়েও পুলিশের মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই ব্যক্তি বলে অভিযোগ তাঁর বাড়ির লোকের। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জের পানিকৌড়ি এলাকায়। মৃতের নাম মৃত্যুঞ্জয় সরকার (৩৫)। পেশায় পুরোনো লোহা লক্কড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। যদিও পরিবারের অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ কর্তারা। মৃত ব্যবসায়ী চোরাই পুরোনো জিনিসের রিসিভার হিসেবে কাজ করতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও পুলিশ সূত্রের খবর মৃত মৃত্যুঞ্জয় নিয়মিত চোরাকারবারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তিনি চোরাই মাল কিনতেন। পরে তা সুযোগমত বিক্রিও করতেন। এমনকী তাঁকে এর আগে আটকও করেছিল পুলিশ। তাঁকে জেরা করে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। মৃতের দাদা মৃণালকান্তি সরকার বেলাকোবার খলজের বাড়ি এলাকায় থাকেন। তিনি অভিযোগ করেন, “এলাকায় বিদ্যুতের চোরাই তার কেনার মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ ভাইকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁদের চাপেই ভাই আত্মঘাতী হয়েছে।” গত ২ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন মৃত্যুঞ্জয়। ১ মাসের বেশি পুলিশি ও জেল হেফাজতে থাকার পরে গত ২০ মার্চ জামিনে ছাড়া পান তিনি। মৃণালবাবু জানান, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন ভাইয়ের উপরে অত্যাচার চালানো হয়। এমনকী বন্দি থাকার সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জামিন দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পরেও থানা থেকে টাকা চেয়ে ফোন করে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরেও রাজগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর, মনোরঞ্জন বর্মন গিয়ে বাড়িতে হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। মৃতের শ্যালক সঞ্জিত দাসও মিথ্যা অভিযোগে বোন জামাইকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ ঠিক নয় বলে মনে করছেন রাজগঞ্জের সার্কেল ইন্সপেক্টর দেবাশিস ঘোষ। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে পুরোনো মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয়েছিল। তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীকে বলে আসা হয়, তিনি এলে থানায় দেখা করতে। পরে এই ঘটনা।” তবে অর্থের দাবি করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে তিনি জানান।

Advertisement

মৃত্যুঞ্জয়ের এক মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। মেয়ে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ক্লাস ফাইভ এবং ছেলে এলকেজি-র ছাত্র। আত্মহত্যার ঘটনার দিন, সকালে মেয়েকে নতুন ক্লাসে ভর্তিও করেন তিনি। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে খুব টেনশনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন শ্যালক। জামিনের পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাতেন তিনি। বলতেন ‘অন্য ব্যবসা করব। কিছু ভাল লাগছে না’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন