গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহকুমার বেশ কিছু এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা যাতে ফের না ঘটে সেই জন্য সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি শুরু হয়েছে ইসলামপুর এবং চোপড়ায়। ৫ এপ্রিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এবং চোপড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে গিয়েছে। ইসলামপুরে দু’টি, চোপড়ার ৮টি এলাকায় ১৭ এপ্রিল নির্বাচন। তাই এই টহলদারি বলে প্রশাসনের কর্তারা জানান। প্রশাসন সূত্রে খবর, দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। প্রতিদিন স্পর্শকাতর, অতি স্পর্শকাতর এলাকায় টহলদারি চালানো হচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ইসলামপুরে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত কমলাগাও সুজালি ও গোবিন্দপুর দার্জিলিং কেন্দ্রের অধীন। ১৭ এপ্রিল ওই এলাকাতে লোকসভা নির্বাচন। পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর, গত পঞ্চায়েত ভোটের দিন চোপড়ার জাগির বস্তি এলাকায় ব্যপক গুলি ও তির চালনার ঘটনা ঘটে। ভোট শুরুর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে যায়। এর পরই ওই কেন্দ্রে সে দিন নির্বাচন বন্ধ করে প্রশাসন। অন্য দিকে, চোপড়ার পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের আগে এক সিপিএম সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের নামে। এমনকী ইসলামপুর থানার কমলাগাও সুজালি এলাকাতে বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পাশাপাশি জোর করে গুলি চালিয়ে কমলাগাও সুজালি পঞ্চায়েত দখলের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সেই সময় ইসলামপুর শহরে একটি খাকি উর্দি ও বেশ কিছু অস্ত্রসহ ধরা পড়ে শতাধিক সিপিএম কর্মী।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “চোপড়ায় স্পর্শকাতর এলাকয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি চলছে। তবে ভোটের সময় অপ্রাতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রতিটি কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশও থাকবে। বিশেষ করে অতি স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলিতে বেশি সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এ ছাড়া মোবাইল পেট্রলিং ব্যবস্থাও রয়েছে।” পুলিশ প্রশাসন সূত্রে খবর, চোপড়ায় ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৭টি। সেখানে ১০২টি কেন্দ্র স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর চিহ্নিত হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল আট কোম্পানি। এ বার নির্বাচনে জেলায় ৩০ কোম্পানির বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বিষয়ে চোপড়ার ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি অশোক রায় বলেন, “নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘুরলেও সব এলাকায় না ঘোরায় সমস্যা হয়। কিছু এলাকায় আমাদের সমর্থকদের ভয় দেখাচ্ছে তৃণমূল ও সিপিএম। প্রত্যন্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর পৌঁছনো উচিত।” সিপিএমের চোপড়া জোনাল কমিটি সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, “এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি খুবই প্রয়োজন ছিল। এলাকার মানুষ নির্ভয়ে ভোটটা দিতে যেতে পারবে। অপর দিকে, চোপড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা হামিদুল রহমান বলেন, “আমরা এলাকাতে শান্তি ও নিরপেক্ষ ভাবে ভোটের পক্ষে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারী প্রশাসনের বিষয়। তা নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।”
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী চোপড়ায় কিছু অংশ পৌছেছে। আরও বাহিনী আসবে। ভোটে এলাকায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। কিছু স্পর্শকাতর কেন্দ্রে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।”