ধান জমিতে গাড়ি চালানোকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক মহিলা-সহ পাঁচ জন জখম হয়েছেন। শনিবার রাতে মালদহের গাজলের আলাল গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সিপিএম সমর্থক সাদিকুল ইসলামের দুশো বিঘা জমির উপর দিয়ে তৃণমূল আফাজউদ্দিন মোষ টানা গাড়িতে ধান নিয়ে যাওয়ার সময় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। জখমদের সকলকেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। রবিবারও দিনভর এলাকায় উত্তেজনা ছিল। পুলিশ দিনভর এলাকায় টহল দিয়েছে। দু’পক্ষই গাজল থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ করেছে। সিপিএম কর্মী সাদিকুল ইসলাম, জিয়াউল হক ও রফিকুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূলের মহম্মদ আফাজউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী সালেহা বিবিও মেডিক্যাল কলেজে চিকিত্সাধীন।
সাদিকুল জানিয়েছেন, শনিবার সকালে নিজের জমির ধান কেটে জমিতেই ছড়িয়ে রেখেছিলেন সিপিএমের ৮ নম্বর বুথ কমিটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নেতা সাদিকুল। অভিযোগ, সেই ধানের উপর দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। সাদিকুলের দাবি, প্রতিবাদ করতেই তৃণমূল সমর্থকদের জড়ো করে আফাজউদ্দিন তাঁর উপর হামলা করে। পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে সাদিকুলের বিরুদ্ধেও। আফাজউদ্দিন পাল্টা অভিযোগ করেন, “সিপিএম কর্মীরাই আমাদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। কারও ফসল নষ্ট না করেই, সন্তর্পণে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। কোনও কথা না বলে সাদিকুলরা হামলা চালায়।”
মেডিক্যাল কলেজে চিকিত্সাধীন সাদিকুলের দাবি, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের বুথ থেকে সিপিএম জয়ী হয়। তারপর থেকেই নানা অত্যাচার শুরু করে তৃণমূল। তারপরেও আমি তৃণমূলে যোগ দিতে রাজি না হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের আশকুর আলি বলেন, “সাদিকুল আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। এখানে তৃণমূলের কোনও সংগঠন নেই। সে জন্য এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে শাসকদলের কর্মীরা শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইছে।” সিপিএমের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ বলেন, “ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। কিন্তু সিপিএম সব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে।” গাজল থানার ওসি সুমন্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।