পাম্প খারাপের জেরে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের হাহাকার পড়েছে শিলিগুড়ি পুরসভার সংযোজিত ওয়ার্ডগুলির অধিকাংশ এলাকায়। দুর্ভোগে পড়েছেন ওই সমস্ত এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দা। গত ১ সপ্তাহ ধরে জল সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে পড়ায় গোবিন্দ নন্দী, বাবু সাহা, দিলা সরকার, সুভাষ সাহাদের কেউ জল কিনে খাচ্ছেন। কেউ পানীয় জলের জন্য রিকশা ভাড়া করে অন্য ওয়ার্ডে যেখানে জল সরবরাহ রয়েছে সেখান থেকে নিয়ে আসছেন। আবার কেউ কুয়োর জল খাচ্ছেন। জল কিনে খেতে হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলমত নির্বিশেষে কাউন্সিলরদের অনেকেই।
এই অবস্থায়, ক্ষোভে বুধবার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর বাজার এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তার ধারে থাকা পুরসভার ট্যাপকলকে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে মৃতদেহ সাজিয়ে ফুলমালা দেন। ‘পানীয় জলের অপমৃত্যু হয়েছে’, ‘পানীয় জল অমর রহে’, ‘মন্ত্রী কেন চুপ’, ‘জল চাই জল দাও’ কাগজে লিখে কলের গায়ে আটকে দিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, পুর পরিষেবা শিকেয় উঠেছে। পুরসভায় গিয়ে সমস্যা জানানোর মতো কেউ নেই। এই এলাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নির্বাচনী ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। তিনিও এই পরিস্থিতিতে চুপ রয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন বাসিন্দাদের একাংশ।
তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলেন, “যারা এত দিন ক্ষমতায় ছিলেন তারা পানীয় জলের পাম্প মেশিনগুলি রক্ষণাবেক্ষণ পর্যন্ত ঠিক মতো করতে পারেননি। তার জন্য বাসিন্দাদের এই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বিষয়টি জানার পর উদ্যোগী হয়েছেন। নতুন পাম্প ভিন রাজ্য থেকে আনতে হবে। জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতরের মাধ্যমে সেগুলি আনার চেষ্টা চলছে।” প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত দাবি করেন, পাম্পের রক্ষণাবেক্ষণ তারা গুরুত্ব দিয়েই দেখতেন। আগেও বহু টাকা খরচ করে তারা পাম্প সারিয়ে ছিলেন। নতুন পাম্পের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে আগেও বলা হয়েছে। তিনি বলেন, “এ পরিস্থিতিতে সমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” এই চাপানউতোরে বিরক্ত বাসিন্দারা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুরভোটের দাবিতে চাপ বাড়াতে চাইছে বিজেপি। বিজেপি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, “পাঁচ বছর একবার বামেদের সঙ্গে ও এক বার তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস বোর্ড চালায়। এই বোর্ড বাসিন্দাদের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে পারেনি। আমরা স্থায়ী বোর্ড চাইছি। শিলিগুড়ি পুরসভার নির্বাচন না হলে দুর্ভোগ মিটবে না।”