জলা ভরাটের নালিশ রতুয়ায়

পুকুর ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ করেছেন কিছু বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ী। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের সামসি এলাকায় এমনই অভিযোগ উঠেছে। সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা জলাশয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভরাট করে নির্মাণ চললেও পঞ্চায়েত-প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০২:৪৯
Share:

এই সেই বিতর্কিত পুকুর, যা দখলের অভিযোগ উঠেছে। রতুয়ায় বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।

পুকুর ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ করেছেন কিছু বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ী। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের সামসি এলাকায় এমনই অভিযোগ উঠেছে। সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা জলাশয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভরাট করে নির্মাণ চললেও পঞ্চায়েত-প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই ওই পুকুরের চারপাশের বেশিরভাগ অংশই বেদখল হয়ে গিয়েছে। তবু পঞ্চায়েত পদক্ষেপ না করায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে পঞ্চায়েতের একাংশ কর্তা ও সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত তরফে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানিয়েছে।

Advertisement

রতুয়া-১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বদিউর রহমান বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।” অভিযোগের কথা জানেন রতুয়া-১ বিডিও নীলাঞ্জন তরফদার। তিনি বলেছেন, “পঞ্চায়েত দফতরে খোঁজ নিয়ে অভিযোগ শুনেছি। পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিছু নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও পৃথক ভাবে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

গ্রাম পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের পেছন দিকেই চার বিঘার পুকুরটি রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা নিত্য প্রয়োজনে ওই জলাশয় ব্যবহার করতেন। জলাশয়ের চার ধারেই বাড়িঘর তৈরি হয়েছেও হচ্ছে। যদিও, গ্রাম পঞ্চায়েতের নজরদারির অভাবে বাসিন্দাদের একাংশ প্রথমে আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট করেছে, তারপরে ওই এলাকাগুলি ঘিরে ফেলেছে বলে অভিযোগ। কিছু ক্ষেত্রে ভরাট করা জায়গার উপরে পাকা নির্মাণও হয়েছে। বাড়ির মতো পুকুরের এক দিকে জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে বেশ কিছু দোকানঘর। ওই এলাকাগুলিতেও পুকুর দখল করে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ৩ বিঘা বেদখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলেও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই পুকুরটি সংস্কার না করায় তা মজে গিয়েছে। তার সুযোগ নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশ সেখানে নোংরা আবর্জনা ফেলতে শুরু করেন।

Advertisement

গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান সুপ্রিয়া সিংহ বলেন, “বিষয়টি নজরে পড়তে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ পুকুর দখল করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবুও পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”

পুকর ভারটের প্রথম অভিযোগ ওঠার পরে কেন কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করেনি তা নিয়েও এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমানে কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা মহম্মদ মোশারফ হোসেনের অভিযোগ, “বার বার বলার পরেও পঞ্চায়েতের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুকুরের জল বাসিন্দারা এক সময় ব্যবহার করতেন তাই নয়। মাছ চাষ করেও পঞ্চায়েত বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা ছিল। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের যোগসাজসেই পুকুর বেদখল সহ অবৈধ নির্মাণ কাজ হতে পারে না।” স্থানীয় ছোটন দাস বলেন, “প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্যও পুকুরটিকে বাঁচানো প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন