জলের সঙ্কট শুরু শিলিগুড়িতে, পুর ভূমিকায় ক্ষোভ

টানা দু’সপ্তাহ ধরে চলছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সংস্কারের কাজ। এর জেরে পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ি শহরে। শীতের মরসুমে কিছু না করে গরম পড়তে শুরু করায় বাসিন্দাদের সমস্যায় ফেলে এখন কেন এই কাজ করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে পুর কর্তৃপক্ষ এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দা থেকে পুরসভার কাউন্সিলরদের অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৮:১০
Share:

টানা দু’সপ্তাহ ধরে চলছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সংস্কারের কাজ। এর জেরে পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ি শহরে।

Advertisement

শীতের মরসুমে কিছু না করে গরম পড়তে শুরু করায় বাসিন্দাদের সমস্যায় ফেলে এখন কেন এই কাজ করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে পুর কর্তৃপক্ষ এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দা থেকে পুরসভার কাউন্সিলরদের অনেকেই।

পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্লান্টে দীর্ঘদিন ধরে পড়া পলি পরিষ্কার এবং সংস্কার কাজ হচ্ছে। সে জন্য সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত ওই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।” কর্তৃপক্ষের দাবি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাসিন্দাদের জানিয়েই কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু শীতের সময় সেই কাজ না করে গরম পড়তে কেন তা করা হচ্ছে সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।

Advertisement

পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ পম্পা দাস জানান, সংস্কার কাজ জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতর থেকে করা হচ্ছে। ওই দফতরই অর্থ বরাদ্দ করছেন। আগে অর্থ বরাদ্দ না মেলায় কাজ করা যায়নি। তবে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই কাজ শুরুর প্রস্তাব তারা দিয়েছিলেন। সে সময় শিবরাত্রির পুজো থাকায় তার পরে কাজ শুরু করতে বলা হয়। জল না মেলায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর কাজল চন্দ-ও।

জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র ইন্দ্রজিৎ সেন বলেন, “১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় চাওয়া হলেও তার আগেই কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

যে বিশেষ জলাধারে প্রাথমিক ভাবে পানীয় জল পরিস্রুত করা হয় তার নীচে কোথাও ৩ ফুট বা তারও বেশি পলি জমেছে। জল ঢোকা এবং বার হওয়ার মুখগুলি পলি পড়ে আটকে পড়ছে। তা না সরালে যে কোনও সময় ওই ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে ঝঙ্কারমোড়, প্রধাননগর, কলেজপাড়ার মতো কয়েকটি জলাধারও সংস্কার করা হচ্ছে।

অভিযোগ, এর জেরে পুরসভার তরফে দুই বেলা যেখানে পানীয় জল সরবরাহ করার কথা সেখানে সকালে কিছু সময়ের জন্য জল দেওয়া হচ্ছে। তাও অনেক ওয়ার্ডেই বিভিন্ন জায়গায় জল সরবরাহ হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে সরু সুতোর মতো ধারায় জল পড়ছে কল থেকে। তাতে গরমের শুরুতে পানীয় জলের সমস্যায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

কাউন্সিলর এবং বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকালে এবং বিকালে ২ ঘন্টা করে জল সরবরাহ করার কথা। এখন সকালে কিছু সময়ের জন্য দেওয়া হচ্ছে। তাও অনেক ক্ষেত্রে জল মিলছে না। পুরসভার বিরোধী দল নেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “এই বোর্ডের কোনও পরিকল্পনা নেই। বিকল্প ব্যবস্থা করে কয়েক দফায় কাজ করা যেত।”

বাম জমানায় পুরসভার পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ ছিলেন মুকুল সেনগুপ্ত, জয় চক্রবর্তী। তাঁরাও জানান, দীর্ঘ সময়ের জন্য এ ভাবে জল সরবরাহ ব্যাহত হওয়া ঠিক নয়। জোটের বোর্ডের সময় পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ ছিলেন রঞ্জন শীলশর্মা। তাঁর কথায়, “জল সরবরাহের মতো পরিষেবা এ ভাবে ব্যাহত হবে কেন সেটাই প্রশ্ন। এক বেলা করে জল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে দাবি করলেও আমার ওয়ার্ডের অনেক জায়গায় এক বেলাও জল সরবরাহ হচ্ছে না।”,

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন