জলবিভাজিকা প্রকল্পের সাফল্য, শুরু কর্মশালা

কোথাও নদী বাঁধ দিয়ে এলাকার চাষবাসের চেহারা অনেকটাই বদলে গিয়েছে ডুয়ার্সের মরাঘাট বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকার। আবার কোথাও পাহাড়ির ঝোরার জলকে কাজে লাগিয়ে সুফল মিলছে। ডুয়ার্সের রাভা বস্তিতে শক্তপোক্ত টং-ঘর বানিয়ে আগের চেয়ে বেশি পরিমাণ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন চাষিরা।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৭:০৯
Share:

কোথাও নদী বাঁধ দিয়ে এলাকার চাষবাসের চেহারা অনেকটাই বদলে গিয়েছে ডুয়ার্সের মরাঘাট বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকার। আবার কোথাও পাহাড়ির ঝোরার জলকে কাজে লাগিয়ে সুফল মিলছে। ডুয়ার্সের রাভা বস্তিতে শক্তপোক্ত টং-ঘর বানিয়ে আগের চেয়ে বেশি পরিমাণ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন চাষিরা। এসবই হচ্ছে জলবিভাজিকা প্রকল্পের সৌজন্যে। আপাতত হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় সাফল্য মিলেছে। তাই আগামী দিনে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় অন্তত ৪০টি জল বিভাজিকা প্রকল্প রূপায়ণের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে বর্ষার আগেই একযোগে কাজে নামবে কৃষি ও বন দফতর। ওই সব প্রকল্প সুষ্ঠু রূপায়ণের কথা মাথায় রেখেই আজ, মঙ্গলবার থেকে শিলিগুড়ির সুকনায় দু’দিনের কর্মশালার আয়োজন করছে বন দফতরের ভূমি সংরক্ষণ বিভাগ।

Advertisement

উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (ভূমি সংরক্ষণ) মণীন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “জলবিভাজিকা প্রকল্পের প্রথম দু-দফার কাজের সুবাদে ডুয়ার্সে কয়েকটি এলাকার চাষবাসের চেহারা অনেকটাই বদলেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় কৃষি দফতর ২২টি ও বন দফতর ১১টি কাজের পরিকল্পনা করেছে। সেই বাবদ ১৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ার কথা। প্রকল্প বিষয়ক বিশদ সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট অফিসার-কর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতামত বিনিময় জরুরি। সে জন্যই কর্মশালা হচ্ছে।” মুখ্য বনপাল জানান, জলবিভাজিকা প্রকল্পে দারুণ সাফল্য পেয়েছে ঝাড়খণ্ড। সেই কারণে ওই কর্মশালায় ঝাড়খণ্ডের জলবিভাজিকা প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ বি নিজলিঙ্গাপ্পাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বন দফতর সূত্রের খবর, জলবিভাজিকা প্রকল্পের আওতায় নদী বাঁধ, ঝোরার জল সংরক্ষণ তো বটেই, তার বাইরের নানা কাজের সুযোগ রয়েছে। যেমন, ডুয়ার্সের রাভাবস্তিতে ফি বছর হাতির হানায় চাষিদের ফসলের সিংহভাগই নষ্ট হয়ে যেত। সে জন্য চাষিরা যাতে হাতির হানা আগাম আঁচ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয় বন দফতর। ওই প্রকল্পের আওতায় রাভা বস্তিতে বেশ কয়েকটি টং-ঘর তৈরি করা হয়। সেখানে নিয়মিত চাষিরা পাহারা দিতে হাতির হানা রোধ করতে সক্ষম হয়েছেন। রাভাবস্তির বাসিন্দারা অনেকেই জানান, টং-ঘর তৈরির পরে হাতির হানা রুখে ফসলের সিংহভাগই তাঁরা ঘরে তুলতে পারছেন। বন দফতরের ভূমি সংরক্ষণ বিভাগের মুখ্য বনপাল জানান, একই ভাবে আরও কয়েকটি বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় ফসল বাঁচানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তবে জলবিভাজিকা প্রকল্পের কাজ করতে নেমে নানা জায়গাতেই প্রচুর জটিলতা তৈরি হচ্ছে। কোথাও জমি জটে থমকে যাচ্ছে কাজ। কখনও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিরোধিতায় কাজ থমকে যাচ্ছে। কী ভাবে সেই সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠা যায় সেই সমাধানসূত্রও দুদিনের কর্মশালায় মিলবে বলে মনে করছে বন দফতর। আজ, সুকনা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের হলে কর্মশালায় শতাধিক অফিসার-কর্মী অংশ নেবেন। সেখানে রাজ্যের জলবিভাজিকা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা রবিকান্ত সিংহ-সহ শীর্ষ কর্তারা থাকবেন। কাল, বুধবার কর্মশালায় যোগ দেবেন বনমন্ত্রী বিনয় বর্মনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন