উত্তরপ্রদেশ থেকে শিক্ষামূলক ভ্রমণ শেষ করে ফেরার পথে ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় হেনস্থার শিকার হলেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অধ্যাপকরা। শুক্রবার রাতে অওয়ধ-অসম এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, লখনউ ও গোরখপুর স্টেশনের মাঝে মালকানপুর স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়াতেই শতাধিক যাত্রী উঠে সংরক্ষিত আসনগুলি ছাড়তে বাধ্য করে তাঁদের। প্রতিবাদ করায় ছাত্রদের উপর ওই বহিরাগতরা চড়াও হয় বলেও অভিযোগ। রাতেই উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে বিষয়টি জানান ভুক্তভোগীরা। উপাচার্যের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরে আসরে নামে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সদস্য তথা রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষও হস্তক্ষেপ করেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে পুলিশ ট্রেনের কামরা থেকে বিনা সংরক্ষণের যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “শতাধিক বিনা টিকিটের যাত্রী শিক্ষামূলক ভ্রমণ থেকে ফেরার সময় আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের কামরায় ওঠেন। জবরদস্তি করে তারা বসে পড়েন। প্রতিবাদ করায় ছাত্রদের ধাক্কা দিয়ে দেখে নেওয়া হবে বলে শাসানো হয়। রাতে ব্যাগ থেকে কেউ খাবার বের করতে পারেনি। যেতে পারেননি শৌচাগারে। সকালে সমস্তিপুর স্টেশনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।” উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম বীরেন্দ্র সিংহের দাবি, “ঘটনার কথা জানার পরেই লখনউ ডিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজোর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের অন্তত দশ জন ছাত্রী সহ ৫০ জন পড়ুয়া দুই শিক্ষকের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশে যান। শুক্রবার রাতে ফেরার জন্য তাঁরা লখনউ স্টেশন থেকে ওই ট্রেনের এস ৭ এবং এস ৮ কামরায় ওঠেন। এরপরেই ওই হেনস্থার ঘটনা ঘটে। রাতে গোরখপুর স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছলে কয়েকজন পুলিশকর্মী ওই কামরায় উঠলেও ‘বহিরাগত’দের পুরোপুরি হঠাতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের তরফে রবীন্দ্রনাথবাবু রেলের কাছে যাত্রী হেনস্থার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে’র বক্তব্য, “ছাত্রছাত্রীরা ফিরলে পুরো বিষয়টি জেনে আমরাও রেলমন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।”