আনন্দপাড়ার বাড়িতে মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে সোহম। ছবি: রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছিপছিপে চেহারা চোখে পাওয়ার গ্লাস। ক্লান্তিতে শরীর সায় না দিলেও বিশ্রামের ফুসরত মিলছে না। ঘর ভর্তি আত্মীয়স্বজন। টানা এক বছর দু’মাস পরে শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির আনন্দপাড়ার বাড়িতে ফিরলেন সোহম সান্যাল। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় মেডিক্যাল বিভাগে সপ্তম স্থানে রয়েছে সোহম। তাই আত্মীয়স্বজন নিয়ে গল্পের আসর বসানো, কখনও বা মিষ্টিমুখ। মেনুতে ইলিশের হাল্কা ঝোল।
এ দিন ল্যাপটপের কি-প্যাডে হাত রেখে কৃতী ছাত্র সোহম বলেন, “আমি মোদীর ফ্যান। গুজরাতকে তিনি কোন পর্যায়ে নিয়েছেন ভাবা যায় না। কাজের মানুষ। আশা করছি দেশকে প্রযুক্তি বিজ্ঞানে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।” পাশে বসেছিলেন দাদু অবসরপ্রাপ্ত বিমা কর্মী মুকুল সান্যাল। নাতির কথা শুনে এক গাল হেসে তিনি বলেন, “রাজস্থানে পড়াশোনা করেছে তো। ওই কারণে সেখানকার রাজনৈতিক পরিবেশে দেখে এমনটা ভাবছে।”
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে রাজ্যের বাইরে দেওঘর ও রাজস্থানের কোটায় থেকে লেখাপড়া সোহমের। জলপাইগুড়িতে তেমন বন্ধুবান্ধব নেই। যা আছে সবই বাইরের। সোহম পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত জলপাইগুড়ি শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। সেখান থেকে চলে যান বিহারের দেওঘরে। রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠে সিবিএসই-র ওই ছাত্র মাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর ও স্বর্ণপদক নিয়ে পাশ করেন। সেখান থেকে রাজস্থানে চলে যান।
কোটায় বিদ্যাশ্রম পাবলিক স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। উচ্চ মাধ্যমিকে ৯৫.৬ শতাংশ নিয়ে পাশ করেন। ছোটবেলা থেকেই সোহমের বরাবরের স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া। মা সুস্মিতা দেবী বলেন, “ও নিজের ইচ্ছে মতো পড়াশোনা করে। আর ভালবাসে কার্টুন দেখতে। খেলায় তেমন উৎসাহ নেই। হইচইয়ের বাইরে একা থাকতে পছন্দ করে।” জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ভাল ফলের জন্য কোটায় একটি নামী সংস্থায় টানা দু’বছর কোচিং নিয়েছেন। সোহমের কথায়, “প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা কোচিং ছাড়াও ঘরে ফিরে পাঁচ ঘণ্টা পড়েছি।”