ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা নমো-র সভাস্থলে

নরেন্দ্র মোদীর সভা ঘিরে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওই সভাকে নিয়েই এখন দলীয় নেতৃত্ব এবং পুলিশ তৎপর। ১০ এপ্রিল শহরের উপকন্ঠে মাটিগাড়ার পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের পাঁচকেলগুড়ি এলাকা নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থল। প্রচার সভা হওয়ায় দলীয় নেতৃত্ব আয়োজনের দায়িত্বে থাকছেন। তবে নিরাপত্তার দিক আগাগোড়া পুলিশ নজরে রাখছে। ভিভিআইপি মোদীর ওই কর্মসূচির জন্য ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে পুলিশ সভাস্থল পরিদর্শন করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১৮
Share:

নরেন্দ্র মোদীর সভা ঘিরে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওই সভাকে নিয়েই এখন দলীয় নেতৃত্ব এবং পুলিশ তৎপর। ১০ এপ্রিল শহরের উপকন্ঠে মাটিগাড়ার পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের পাঁচকেলগুড়ি এলাকা নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থল। প্রচার সভা হওয়ায় দলীয় নেতৃত্ব আয়োজনের দায়িত্বে থাকছেন। তবে নিরাপত্তার দিক আগাগোড়া পুলিশ নজরে রাখছে। ভিভিআইপি মোদীর ওই কর্মসূচির জন্য ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে পুলিশ সভাস্থল পরিদর্শন করেছে। অন্তত আড়াই লক্ষ লোকের সমাগম হবে বলে নেতৃত্ব আশা করছেন। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র ছাড়া উত্তরের অন্য লোকসভা কেন্দ্রগুলির বিজেপি’র দলীয় প্রার্থীদেরও সেখানে হাজির করানো হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে মোদীর সভা উত্তরবঙ্গে দলের প্রচারের বড় হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ বিমানে ওই দিন আমদাবাদ থেকে বাগডোগরায় নামবেন নরেন্দ্র মোদী। সোমবার বিকেল পর্যন্ত ঠিক ছিল সেখান থেকে সড়ক পথে মোদীকে নিয়ে সভাস্থলে পৌঁছবে ১০ টি গাড়ির কনভয়। সাংবাদিক বৈঠকে তা জানানো হয়। পরে এ দিন সন্ধ্যায় মোদীর এই সফরের দায়িত্বে থাকা দলীয় নেত্বত্ব শিলিগুড়ির নেতাদের জানিয়ে দেন বাগডোগরায় নেমে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে সভায় যাবেন। বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, “৯টা থেকে সভা শুরু হলেও মোদী সভায় পৌঁছচ্ছেন আধ ঘণ্টা পর। সভায় ঘণ্টা খানেক থাকবেন তিনি। সভা সেরে তিনি যাবেন হাজারিবাগে। সেখান থেকে বিহারের আরা’য় আর একটি সভায় যোগ দেওয়ার কথা।” মোদীর ওই সভায় থাকছেন সৎপাল মহারাজ এবং বিজেপি’র এই রাজ্যের সভাপতি রাহুল সিংহ। সভায় থাকবেন মোর্চা নেতৃত্ব। অমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ-সহ তাঁদের অন্যান্য নেতৃত্বকেও।

উদ্যোক্তারাই জানান, সভাস্থলে ৩টি মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। একটি মূলমঞ্চ। সেখানে মোদী এবং তা সঙ্গে থাকবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, সৎপাল মহারাজ, দার্জিলিং কেন্দ্রে প্রার্থী সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি, মোর্চার শীর্ষ নেতারা সব মিলিয়ে ১০ জন। ওই মঞ্চ ২০ ফুট লম্বা এবং ১৫ ফুট চওড়া। ওই মঞ্চ থেকেই বক্তব্য রাখবেন মোদী। দুই পাশে আরও দুটি মঞ্চ হবে। একটিতে থাকবেন দলের জেলার নেতারা। অপর মঞ্চে থাকবেন উত্তরবঙ্গের অন্যান্য লোকসবা কেন্দ্রের প্রার্থী এবং সেই সমস্ত কেন্দ্রের দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। ওই দুটি মঞ্চ মূল মঞ্চের চেয়ে বড় হবে। সভার মাঠের এক দিকে করা হচ্ছে হেলিপ্যাড-ও।

Advertisement

সভাস্থলের ওই এলাকা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত। নিরাপত্তার একটা বড় দ্বায়িত্ব তাদের পালন করতে হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, নিরাপত্তার ত্রয়ী বেষ্টনীতে ঘেরা থাকবেন মোদী। তাঁর সব চেয়ে কাছাকাছি থাকবে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর কম্যান্ডোরা। দ্বিতীয় নিরাপত্তা বলয়ে থাকছে গুজরাত পুলিশ। শেষ স্তরে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা বলয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর ওই জনসভায় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশের উপস্থিতিতেই মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। সভার দিন প্রয়োজনীয় সমস্তই নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। বাগডোগরায় তাঁর নামার কথা। তাই সেখানেও বিশেষ নিরাপত্তা থাকছে।”

ইতিমধ্যেই সভার আয়োজনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। সভাস্থলে জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে পুলিশের উদ্যোগে। আলাদা ভাবে ভিআইপি পার্কিং, সাধারণ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। নির্বচনী বিধিনিষেধ ঠিক মতো মানা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে নজরদারির জন্য সভায় কমিশনের মডেল কোড অব কনডাক্ট সেলের কর্মী থাকছেন। শিলিগুড়িতে এমসিসির দায়িত্বে থাকা ওসি বীরবিক্রম রাই জানান, মাটিগাড়া বিডিও অফিসে এমসিসি’র যে দল রয়েছে তারাই ব্যবস্থা করবেন। সে জন্য কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হচ্ছে।

শহরের মধ্যে সভার আয়োজনের জন্য প্রথমে সচেষ্ট হয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। তবে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় যথাযথ মাঠ। কেন না জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে সে রকম মাথ মেলাটাও সমস্যা হয়ে ওঠে। প্রথমিক ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম এবং বর্ধমান রোডে রেলের মাঠ নেওয়ার জন ভাবনা চিন্তা করা হয়েছিল। তবে নির্বাচনী সভা করতে সরকারি মাঠ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে বলে জানানো হয় বিজেপি নেতৃত্বকে। এর পর শহরের উপকণ্ঠে ৬০ একরের ওই জায়গা সভার জন্য বাছা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন