বুধবার বেসরকারি বাস না চলায় অন্যান্য বাসে এমনই ভিড় হল মালদহে। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
বাস মালিকদের মধ্যে বিরোধ অব্যাহত থাকায় বুধবারও মালদহে বন্ধ থাকল বেসরকারি বাস চলাচল। ফলে এ দিনও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নিত্যযাত্রীদের।
বেসরকারি বাস না থাকায় যাত্রীদের অন্য গাড়িতে বাদুড়ঝোলা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলার মানুষ বেসরকারি বাসের উপর নির্ভরশীল। হঠাত্ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অথচ বাসমালিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে প্রশাসন এখনও উদ্যোগী নয়। যার ফল ভুগতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। তবে বুধবার বিকেলে এই নিয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে জেলা প্রশাসন। মালদহের মহাকুমাশাসক (সদর) নন্দিনী সরস্বতী বলেন, “বাসের সময়সূচী নিয়ে একটা বিরোধ ছিল। সেই সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে তারা বাস চালাবেন বলে জানিয়েছেন। বাস মালিক সংগঠনগুলিও জানিয়েছে, প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ায় বাস চালানো হবে।”
বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্ট্যান্ডে বাসমালিকদের দু’টি সংগঠন রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বাসের সময়সূচী নিয়ে মালদহ বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মালদহ প্রগ্রেসিফ ওয়েলফেয়ারএই দুই বাস মালিক সংগঠনের মধ্যে বচসা হয়। এর পর ওই দুই বাসের কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের দাবি, সকাল ৯টা নাগাদ দৈনিক মালদহ-বালুরঘাট রুটে বাস চলাচল করে। সেটি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক মালিকের। সেই সময়েই নতুন একটি বাস চালানোর কথা বলে অপর সংগঠনটির মালিকেরা। এ দিন বাসটি ছাড়ার সময় প্রগ্রেসিফ সমিতির মালিকেরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ। ওই বাসের কর্মীদের গালিগালাজ করা হয়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তারপর থেকেই দু’পক্ষের কর্মীরাই বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। বুধবারও কোনও সমাধান না হওয়ায় বাস চলাচল বন্ধ থাকে। বেসরকারি বাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় মোট ২৬০টি বাস রয়েছে। সেগুলি মালদহ থেকে চাঁচল, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, নালাগোলা, মানিকচক, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি রুটে চলাচল করে। এ দিন জেলার কোন বাসই চলেনি। শুধুমাত্র বাইরের জেলার বাস যাতায়াত করেছে। ফলে অতুলচন্দ্র বাস স্ট্যান্ডে সমস্ত বাস আটকে থাকে।
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিমাই বিশ্বাস বলেন, “আমাদের এক মালিকের বাস নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাড়লে প্রগ্রেসিফ সমিতির মালিকেরা বাধা দেয়। তারা দাবি করে, এই সময়ে তাদেরই গাড়ি চলবে। তাদের ওই গাড়িটি নতুন এসেছে। তারা আমাদের কর্মীদের গালিগালাজ ও মারধর করে। এতে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন। এ দিনও সমাধান না হওয়ায় কর্মীরা বাস চালাননি।” অন্য দিকে, প্রগ্রেসিফ সমিতির সম্পাদক বিবেক দাস বলেন, “ওই গাড়িটি বন্ধ ছিল। তাই আমরা এই সময়ে গাড়ি চালানোর কথা বলেছিলাম। তাঁরা আমাদের গাড়ির কর্মীদের গালিগালাজ ও মারধর করেছিল। আমাদের কর্মীরা এ দিন গাড়ি বের করেননি।”