দীপাবলি মাতাবে তিনরঙা বল

তুবড়িতে থেকে বার হবে নানা রঙের ছোট ছোট বল। সাদা, লাল ও সবুজ। রোশনাই আকাশের দিকে ১৫-২০ ফুট উঁচু অবধি উপরে উঠে তা আবার নেমে আসবে মাটিতে। যা প্রায় মিনিট খানেক ধরে চলবে। এই তুবরির বাজারি নাম রাখা হয়েছে-‘ট্রাই কালার বল’। এ বারের দেওয়ালিতে দার্জিলিং জেলার একমাত্র বাজি কারখানার নতুন সংযোজন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

ফাঁসিদেওয়া শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

লিউসিপুখুরির কারখানায় চলছে বাজি তৈরির কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

তুবড়িতে থেকে বার হবে নানা রঙের ছোট ছোট বল। সাদা, লাল ও সবুজ। রোশনাই আকাশের দিকে ১৫-২০ ফুট উঁচু অবধি উপরে উঠে তা আবার নেমে আসবে মাটিতে। যা প্রায় মিনিট খানেক ধরে চলবে। এই তুবরির বাজারি নাম রাখা হয়েছে-‘ট্রাই কালার বল’। এ বারের দেওয়ালিতে দার্জিলিং জেলার একমাত্র বাজি কারখানার নতুন সংযোজন।

Advertisement

আগামী ২৩ নভেম্বর কালীপুজো। ওই দিন থেকে দুইদিন ধরে চলে দেওয়ালির রোশনাই। তাই ফাঁসিদেওয়া থানার লিউসিপুখুরির হাতিরামজোতে গ্রামের দুই বিঘা জমির উপর থাকা কারখানার মহিলা-পুরুষ মিলিয়ে জনা দশেক কর্মীর তাই এখন দম ফেলার সময় নেই। দিনরাত চলছে তুবরির কাগজের কাপবোর্ড তৈরি থেকে শুরু করে বারুদের মশলা ভরা, সলতে বানানো, কাগজের লেবেল সাঁটা থেকে শুরু করে রোদে শুকানোর কাজ। তৈরি হবে প্রায় ২ লক্ষ তুবরি।

কারখানার মালিক, শিলিগুড়ি বাসিন্দা জয়ন্ত সিংহ রায় বলেন, “তামিলনাড়ুর শিবাকাশি-সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাজি শিলিগুড়ি হয়ে উত্তরবঙ্গের বাজারে দীপাবলিতে ছেয়ে যায়। সেখানে আমরা কারখানা এই অঞ্চলের একমাত্র বাজি কারখানা। প্রতিযোগিতার বাজারে তাই প্রতিবার চেষ্টা করি নতুন কিছু করার।” তিনি জানান, এবারে অনেক পরীক্ষার পর ট্রাইকালার বল তৈরি করেছি।”

Advertisement

এর আগের বার দেওয়ালিতে ‘মাধুরি লাইট’ বলে নতুন একটি রং মশাল এবং ‘কালার রেন’ বলে তুবড়ি তৈরি করেছিলেন জয়ন্তবাবু। তিনি জানান, আগে সাধারণ রংমশাল তৈরি করতাম। তা থেকে সাধারণ সাধারণ সাদা রঙের আলোর ছটা বার হত। পরে তাতে আরেকটি রং যোগ করি। শেষে ‘মাধুরি লাইট’ বানাই। পরপর তিন ধরণের রং এবং মিক্সড কালার বার হয় মশালটি থেকে। একইভাবে ওই ধাঁচেই ‘কালার রেইন’ তুবরি বানাই। এবার পরীক্ষার পর তুবরির ‘ট্রাই কালার বল’ বানিয়েছি। কয়েক মাস ধরে নিজে তৈরি করে ফাটানো, ব্যবসায়ীদের দেখাতে হয়েছে। শেষে কারখানার কর্মীদের নিজে হাতে টানা কয়েকদিন প্রশিক্ষণও দিতে হয়েছে। ট্রাই কালার বল, কালার রেইন, সাধারণ তিন ধরণের তুবরি এবার তৈরি হচ্ছে জয়ন্তবাবুর কারখানায়। সেই সঙ্গে চলছে মাধুরি লাইট-সহ তিন ধরণের রং মশালও তৈরি।

শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়া জয়ন্তবাবুর ছেলে রাজ’ও এবার বাবার সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন। জয়ন্তবাবুর দাবি, তাঁর স্ত্রী’র দাদু হরিপদ সাহা রানী ভিক্টোরিয়ার আমলের বাজির কারিগর ছিলেন। রায়গঞ্জের ওঁর বাড়ি এখনও বাজিওয়ালার বাড়ি বলে পরিচিত। তাঁর হাত ধরেই বাজি তৈরি ও খুঁটিনাটি শিখেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন