দ্বন্দ্বের জেরে গ্রন্থমেলার পরে এ বার বইমেলা

মাসখানেক আগে ধূপগুড়িতে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা করেছিল গ্রন্থমেলা। সেখানে দলতন্ত্রের অভিযোগ তুলে মার্চেই বইমেলা করতে উদ্যোগী হয়েছেন বিরোধীরা। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নাম রাখা হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্রচন্দ্র রায়ের নাম। তিনি অবশ্য জানুয়ারিতে হয়ে যাওয়া ‘গ্রন্থমেলা’র কমিটিতে ছিলেন না। দলতন্ত্রের অভিযোগ মানেননি তিনি।

Advertisement

নিলয় দাস

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৭
Share:

মাসখানেক আগে ধূপগুড়িতে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা করেছিল গ্রন্থমেলা। সেখানে দলতন্ত্রের অভিযোগ তুলে মার্চেই বইমেলা করতে উদ্যোগী হয়েছেন বিরোধীরা। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নাম রাখা হয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্রচন্দ্র রায়ের নাম। তিনি অবশ্য জানুয়ারিতে হয়ে যাওয়া ‘গ্রন্থমেলা’র কমিটিতে ছিলেন না। দলতন্ত্রের অভিযোগ মানেননি তিনি।

Advertisement

ধূপগুড়ির এক সিপিএম নেতার প্রয়াণের আগে টানা কুড়ি বছর ধরে জানুয়ারিতে হয়ে আসছিল বই মেলা। তিনি মারা যাওয়ার পরে মেলার রাশ যায় তৃণমূলের হাতে। বছর তিনেক আগে পুরনো মেলার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে বইমেলার নাম পাল্টে রাখা হয় গ্রন্থমেলা। সিপিএমের অভিযোগ, সেই সময় থেকে মেলা নিয়ে দলবাজি করে আসছিল তৃণমূল। পাশাপাশি, তৃণমূলের অনেকেও সেই মেলার পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলেন গত দু’বছর ধরে। যার জেরে ফের মার্চে নতুন বই মেলা করতে উদ্যোগী হয় বিরোধী শিবির।

এলাকার সিপিএম বিধায়ক মমতা রায়ের কথায়, “আমি এক জনপ্রতিনিধি। তা সত্ত্বেও গ্রন্থমেলায় ডাকা হত না। আগের বইমেলায় এমন হত না। নতুন করে বইমেলা করছে, তারা সবাইকে নিয়ে মেলা করছে।” একুশতম বই মেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অলোক সরকারের কথায়, “গোড়া থেকে বইমেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পুরসভা প্রথমবার আমায় ডেকেছে। পরের বার থেকে আর ডাক পেতাম না। আমরা চাই, পুরনো ঐতিহ্য ফিরে আসুক।”

Advertisement

এলাকার সিপিএম কাউন্সিলর মনোজ ঘোষের কথায়, “৪-৫ টি বইয়ের স্টল দিয়ে পুরসভার গ্রন্থ মেলা মানুষের মন যোগাচ্ছিল না।” আমরা চাই, সবাই থাকুক বইমেলাতে। ধূপগুড়ির বাসিন্দা লেখক অমিতকুমার দে অবশ্য বলেন, “বইমেলা একাধিক হলে তো ভালই। তবে পুরসভার বইমেলায় কিছুটা অভিজ্ঞতার খামতি নজরে পড়েছে। মেলা নিয়ে দলতন্ত্র কাম্য নয়।”

পঁচিশ বছর আগে ধূপগুড়ির কয়েক জন বইপ্রেমীর উদ্যোগে প্রথম বার বই মেলা শুরু হয়। তিন বছর বৈরাতিগুড়ি স্কুলের ঘরে ওই বই মেলা চলার পর বন্ধ হয়ে যায়। তিন বছর বাদে সে সময়কার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা সিপিএম নেতা গোপাল চাকির উদ্যোগে নতুন করে বই মেলা চালু হয়। ২০০২ সালে কেএলও জঙ্গিদের গুলিতে মারা যান গোপাল বাবু।

২০০৩ সাল থেকে বই মেলার প্রাঙ্গণের নামকরণ হয় গোপালবাবুর নামে। তবে এক সময় অভিযোগ ওঠে, বই মেলা কয়েকজন বইপ্রেমীর বদলে সিপিএম-এর নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এক বছর মেলা বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে পুরসভা মেলার দায়িত্ব নেয় মেলার। নামকরণ করা হয় গ্রন্থমেলা। গোপাল চাকি প্রাঙ্গণের নামও বদলানো হয়। তবে সেখানেও তৃণমূল দলতন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। পুরসভা প্রচুর টাকা খরচ করলেও বইমেলায় বইয়ের আধিক্য কমতে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। উল্টে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের নানা স্টলের সংখ্যা বেড়ে যেতে থাকে বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন