মেয়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ মা। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
বালি-পাথরের লরির ধাক্কায় এক শিশু মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির প্রধাননগর এলাকার চম্পাসারি মোড় এলাকায়। ট্রাকটিকে আটকে রেখে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর করা হয় পিছনের একটি ট্রাকেও। এলাকায় সরকারি টোল গেটের অফিসও ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের চোখের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। পরে প্রধাননগর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দুুপুর ১২টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর নাম বীণা মণ্ডল (৫)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় পোকাইজোতে। ঘটনার পর এলাকায় ভোর পাঁচটার পর ভারী ও মালবাহী গাড়ি চালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা চালুর দাবি উঠছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন জানান, চালককে খোঁজা হচ্ছে। পোকাইজোতের বীতেশ্বর রায়ের স্ত্রী ও মেয়ে বীণা সকাল নটা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। শিশুটির মা রাস্তা পার হয়ে গেলেও সে পিছনে পড়ে যায়। সেই সময় আচমকা তাকে ট্রাকটি ধাক্কা মেরে পিষে দেয়। ট্রাকটি মিলন মোড়ের দিক থেকে চম্পাসারি মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। ক্ষুব্ধ জনতা ট্রাকটিকে আটকে চম্পাসারি রোড অবরোধ শুরু করেন। ওই ট্রাকটি ও আর এক ট্রাকে ভাঙচুর শুরু হয়। এর পরে টোল গেটে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
দুর্ঘটনার পর আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে টোল সংগ্রহের অফিসে। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই দিনই সকাল থেকে দিনভর ট্রাক-সহ নানা গাড়ি এই রাস্তায় যাতায়াত করে। কোনও কোনও চালক এমন বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায়, এতে দুর্ঘটনা ঘটতে ঘটতে অনেক পথচারী রক্ষা পান। অথচ এলাকায় বড় বাজার, হাইস্কুল-সহ নানা সরকারি অফিস রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের কার্যত দেখাই মেলে না। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাস্থলে যান পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর শিখা রায়। তিনি বলেন, “কয়েক বছর আগে প্রশাসন, ট্রাক মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ট্রাক চলার অনুমতি দেওয়া হয়। তবু দিনে ট্রাক চলে। পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে হবে।” ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তিনি বাসিন্দাদের নিয়ে আন্দোলন হবে বলে তিনি জানান।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “শিশুর মৃত্যু দুঃখজনক। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে হবে।”