হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি

দল ছেড়ে বাম সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ৭ জনের

গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে দল ছেড়ে নির্দল হলেন পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতাসীন বাম বোর্ডের সাত সদস্য। মঙ্গলবার দুপুরে কংগ্রেসের ১২ সদস্যের সঙ্গে জোট বেঁধে চাঁচল মহকুমাশাসকের কাছে সিপিএম সভাপতির বিরুদ্ধে তাঁরা অনাস্থাও পেশ করেন। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির এই ঘটনায় সরগরম হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share:

গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে দল ছেড়ে নির্দল হলেন পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতাসীন বাম বোর্ডের সাত সদস্য। মঙ্গলবার দুপুরে কংগ্রেসের ১২ সদস্যের সঙ্গে জোট বেঁধে চাঁচল মহকুমাশাসকের কাছে সিপিএম সভাপতির বিরুদ্ধে তাঁরা অনাস্থাও পেশ করেন। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির এই ঘটনায় সরগরম হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা।

Advertisement

সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ, বাম সদস্যদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূল তাদের ঘর ভাঙছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের ফব বিধায়ক তজমূল হোসেনের দাবি, দলছাড়া ওই সাত জন অবিলম্বে তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য এমন কথা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।

এদিন দুপুরে প্রশাসনের কাছে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার পরেই জোটের ১২ সদস্য গোপন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। অনাস্থার তলবি সভা পর্য়ন্ত তারা সেখানেই থাকবেন বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। দলত্যাগী বাম সদস্যদের দাবি, এলাকার উন্নয়নের কথা ভেবেই তারা নির্দল হয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ হয়েছে। আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হবে।”

Advertisement

সমিতি সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে সিপিএম-১৪, ফব-২ ও কংগ্রেস পাঁচটি আসন পায়। সভাপতি হন সিপিএমের জামিল ফিরদৌস। কিন্তু সদস্যদের একাংশের সঙ্গে সভাপতি-সহ কয়েকজনের বনিবনা হচ্ছিল না বলে সমিতি সূত্রের খবর। এর পরে সোমবার সিপিএমের ৬ জন ও ফব-র এক সদস্য প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়ে নির্দল হওয়ার কথা জানান। এদের মধ্যে বোর্ডের চার কর্মাধ্যক্ষও রয়েছেন।

সমিতির সভাপতি তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌস বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করা হয়েছে। লোভে পড়েই ওঁর া দলত্যাগ করেছেন। শুনেছি, অর্থ ও চাকরির টোপ দিয়ে তৃণমূল ওঁদের ভাঙিয়েছে। ওই চক্রান্তে পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতার হাত রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, যাতে ওঁদের ভুল ভাঙিয়ে ফের দলে ফেরানো যায়।’’ হরিশ্চন্দ্রপুরের ফব বিধায়ক তজমূল হোসেনও একই দাবি করেছেন।

দলত্যাগী এক সদস্যা তথা খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়শ্রী কর্মকার অবশ্য দাবি করেছেন, “গত দেড় বছরে এলাকার উন্নয়নে কোনও কাজ করতে পারিনি। কাজ না করলে মুখ দেখাব কী করে? তাই কোনও প্রলোভনে পড়ে নয়, স্বচ্ছভাবে বোর্ড চালাতে প্রত্যেকেই স্বেচ্ছায় দল ছেড়েছি। কংগ্রেস আমাদের নিঃশর্ত সমর্থনের কথা বলেছে। এখনই অন্য কোনও দলে যাওয়ার প্রশ্ন নেই।” বিরোধী কংগ্রেস দলনেতা রবিউল ইসলাম বলেন, “ওঁরা নির্দল হওয়ায় আমরা তাঁদের সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছি।”

যদিও ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই। সমিতিতে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। তার পরেও তাদের সদস্যরা কেন দল ছাড়ল, সেটা ওদেরই ভেবে দেখা উচিত। দলত্যাগীরা তৃণমূলে যোগ দেবেন, এমন কথা আমার জানা নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন