অবশেষে বদলি করা হল ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ না নিয়ে বরং সালিশির পরামর্শ দেওয়ায় অভিযুক্ত পুকুরিয়া থানার ওসিকে।
শুক্রবার জেলার ১৪ জন অফিসারকে বদলির সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মধ্যে পুকুরিয়া থানার ওসি প্রদীপ সরকারকে কালিয়াচক থানায় থার্ড অফিসার পদে বদলি করা হয়েছে। যা কি না পদাবনতি বলেই মনে করছে পুলিশ মহলের একাংশ। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য একে ‘রুটিন বদলি’ বলেই দাবি করেছেন। তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তে প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য মেলায় তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন এসপি। প্রদীপবাবু বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ওই ঘটনার কথা শুনেছেন অভিযোগকারিণী। যিনি গত জুলাই মাসে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে পুকুরিয়া থানায় গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ওসি তাঁকে সালিশিতে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মতো সালিশিও হয়। তার পরে দু’সপ্তাহ আগে অভিযুক্ত রিন্টু শেখ ফের অভিযোগকারিণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাধা দেওয়ায় তাঁর বাবাকে মারধর করে রড দিয়ে চোখ নষ্ট করে দেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে হইচই হলে পুলিশ শেষ পর্যন্ত ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করতে বাধ্য হয়। গ্রেফতার করা হয় রিন্টু কে। এতদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর সম্প্রতি রিন্টুকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
অভিযোগকারিণীর বাবা এখনও মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি। তিনি একটি চোখে ঝাপসা দেখছেন। ওই মহিলা বলেন, “বাবা চোখে ঠিক মতো দেখতে পাচ্ছেন না। চিকিত্সকেরা তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না। আমি দিনমজুরি করে সংসার চালাই। প্রতিদিন হাসপাতালে যাতায়াত করতে হওয়ায় কাজ করতে যেতে পারছি না। বাবাও রোজগার করতে পারছেন না। কী ভাবে বাবাকে কলকাতা নিয়ে যাব বুঝে উঠতে পারছি না।”
এদিকে,এখনও অধরা হবিবপুর থানার আকতৈল এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত পিনাকী রায়। মামলা হলেও অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থককে পুলিশ তিন মাসেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে ওই যুবক ছাত্রীটিকে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ভয়ে ছাত্রীটি স্কুলে যাচ্ছে না। বার্ষিক পরীক্ষাও দিতে পারছে না। সে জন্য গত বৃহস্পতিবার আইনজীবী গোপাল বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হয় সে। শুক্রবার মালদহের পুলিশ সুপার বলেন, “অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”