নাট্যব্যক্তিত্বদের পাশে চান অর্পিতা

প্রার্থীপদ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘর গোছাতে নেমে পড়লেন বালুরঘাট লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষ। দল তো আছেই, সেই সঙ্গে জেলার নাট্যকর্মীদের পাশে পেতেও তৎপর হয়েছেন অর্পিতাদেবী।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৭:৫০
Share:

প্রার্থীপদ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘর গোছাতে নেমে পড়লেন বালুরঘাট লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষ। দল তো আছেই, সেই সঙ্গে জেলার নাট্যকর্মীদের পাশে পেতেও তৎপর হয়েছেন অর্পিতাদেবী। বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে টেলিফোনে অর্পিতাদেবী বলেন, “বালুরঘাটে নাট্যব্যক্তিত্ব হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শীঘ্রই যোগাযোগ করব। হরিমাধবদাকে আমার হয়ে প্রচার করতে অনুরোধ করব। অনেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে।”

Advertisement

বালুরঘাটে নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে এ দিন প্রখ্যাত নাট্যপরিচালক ও অভিনেতা হরিমাধব মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুব ভাল যে উনি পেশাদার রাজনীতিক নন। উনি ভাল কাজ করতে পারবেন বলেই মনে হয়।” প্রচার প্রসঙ্গে হরিমাধববাবুর বক্তব্য, “রাজনীতি থেকে আমি দূরেই থাকতে পছন্দ করি। রাজনীতিতে সামিল হওয়ার প্রস্তাব আগেও অনেক পেয়েছিলাম। ওই ক্ষেত্রটিতে ঢুকতে মন চায় না।”

তবে রাজনীতির বাইরে বৃত্তের তৃণমূল প্রার্থীর সকলকে সামিল করা চেষ্টাকে দেখে অতিমাত্রায় সতর্ক বামেরা। আরএসপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “প্রার্থী নিয়ে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করব না। ভোটের ময়দানে সকলে নামুন। তারপরই যা বলার বলব।” আর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “বালুরঘাট সংস্কৃতিমনস্ক শহর। তার সঙ্গে যুক্ত অনেক নাট্য ব্যক্তিত্ব মানুষ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে প্রার্থী বাছাই করতে পারত তৃণমূল। আর তৃণমূলে নেত্রীর কথাই শেষ কথা। কর্মীদের দাম নেই।”

Advertisement

বস্তুত, বালুরঘাট লোকসভা আসনে দলের স্থানীয় প্রার্থীর বদলে বহিরাগত প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের একাংশ কর্মীর মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। যা এ দিন অস্বীকার করেননি দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তিনি বলেন, “কর্মীদের একাংশ হতাশ হয়েছেন ঠিকই। তবে আলোচনা করে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। আজ, শুক্রবার জেলা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সব কিছুই সেখানে আলোচনা হবে।”

তবে তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে সংস্কৃতি মহলে আবার নানা প্রতিক্রিয়া মিলছে। যেমন, নাটকের শহর বালুরঘাটের দীপালিনগরের বাসিন্দা নাট্যকর্মী সুমি নিয়োগী চক্রবর্তী বলেন, “এখানে নাটকের ধারা কমে গিয়েছে। অর্পিতাদির মত নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রার্থী হওয়ায় সেই ধারা ফিরে আসবে। ওঁর হয়ে প্রচার করব। হরিমাধববাবু রাজ্যে বালুরঘাটকে চিনিয়েছেন। অর্পিতাদির হাত ধরে এ বার দিল্লিতে বালুরঘাটের নাট্য সংস্কৃতির পরিচয় ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”

আবার বালুরঘাটের নাট্যকর্মী সংস্থা’র সম্পাদক অমিত সাহা বলেন, “নাট্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে অর্পিতাদেবীকে শ্রদ্ধা করি। তবে নাটকের লোক, নাটকেই থাকা উচিত। সবার আগে কলকাতার সঙ্গে জেলার নাট্যকর্মীদের সমমূল্যায়ণ হওয়া দরকার।” এ প্রসঙ্গে নাট্যকর্মী অমিতবাবুর ব্যাখ্যা, কলকাতার নাট্যদলগুলি নাটকের একটি শো মঞ্চস্থ করে পান ১ লক্ষ টাকা। আর জেলার নাট্যদলের সে ক্ষেত্রে পাপ্য মাত্র ৫ হাজার টাকা।

আর ত্রিতীর্থ নাট্যগোষ্ঠীর পুরনো নাট্যকর্মী কমল দাসের কথায়, “সৃষ্টিশীল মানুষ বৃহত্তর জগতে কাজ করতেই পারেন। আমি খুশি।” উৎসাহিত শিক্ষক মহলও। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সমাজদার এ দিন এসএমএসে অর্পিতাদেবীকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “আমরা অর্পিতাদেবীর হয়ে প্রচারে তৈরি।” এদিন কলকাতা থেকে অর্পিতাদেবী বলেন, “জেলা থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। কলকাতার কিছু কাজ গুছিয়ে নিয়ে। আগামী সপ্তাহেই বালুরঘাটে যাব। মুকুলদা’র (মুকুল রায়) সঙ্গে কথা বলে শীঘ্রই বিপ্লবদার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রচারে নামব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement