নেতারা সব কোথায়, ফুঁসছেন ক্ষতিগ্রস্তরা

শিলিগুড়ির আশিঘর, চয়নপাড়া, একতিয়াশাল, পাপিয়াপাড়া, আশরফনগর ও গৌরাঙ্গপল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে শাসকদলের প্রতি ক্ষোভ আরও বেশি। এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী নিজে শহরে নেই।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৩৯
Share:

বুধবার হাতি এ ভাবেই ভেঙেছে শহরের বহু ঘর।—ফাইল চিত্র।

ক্ষোভ বাড়ছে হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্তদের। তাঁদের অভিযোগ, অন্য সময় রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এলাকায় আসা যাওয়া করেন। কিন্তু হাতির হানায় এলাকার একাধিক পরিবার কার্যত নিঃস্ব হয়ে গেলেও কেউ আসেননি।

Advertisement

শিলিগুড়ির আশিঘর, চয়নপাড়া, একতিয়াশাল, পাপিয়াপাড়া, আশরফনগর ও গৌরাঙ্গপল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে শাসকদলের প্রতি ক্ষোভ আরও বেশি। এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী নিজে শহরে নেই। শাসকদলের অন্য কাউকেও এলাকায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকার সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ সিংহ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ এলাকায় চোখের দেখা দেখতে না আসায়। ডাবগ্রাম-২ এর পঞ্চায়েত প্রধান সুধা সিংহ চট্টোপাধ্যায় সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় এলাকায় যেতে পারেননি বলে জানান। তবে তাতে ক্ষোভ কমছে না কারওই। যদিও বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এত দ্রুত সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব নয়।

দিলীপবাবুর অভিযোগ, তাঁরা সমস্ত জায়গায় ঘুরে যাঁদের ঘর ভেঙেছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আবেদনপত্র লিখিয়ে জমা দিয়েছেন। তবে শাসক দল বা বন দফতরের কেউই এলাকায় যাননি। তাঁর দাবি, ‘‘দুদিন পরেও কেউ দেখে যাননি কী হয়েছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু আবেদন পত্র যাচাই করে তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হল না।’’ অথচ বহু পরিবারে কারও বাড়িতে চাল নেই, কারও শৌচাগারই নেই। ফলে প্রবল সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। সরকারি প্রক্রিয়ার উপরে মানুষের জীবন নির্ভর করে না বলে তাঁর দাবি। ডাবগ্রাম-২ এর পঞ্চায়েত প্রধানও সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিন আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। সবাইকে বলেছি রেঞ্জ অফিস থেকে ফর্ম নিয়ে তা ভর্তি করে জমা দিতে। তা করাও হচ্ছে।’’

Advertisement

যদিও হানার দু’দিন পরেও ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না তা নিয়ে ধন্দে এলাকাবাসী। দু’দিনে সব মিলিয়ে ক্ষতিপূরণের আবেদনকারীদের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। অথচ বন দফতরের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী কে কত টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে তা নিয়েও ধোঁয়াশা কাটেনি।

বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের ডিএফও পিআর প্রধান সমস্ত প্রক্রিয়া এত দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি প্রক্রিয়ার ধরণ বদলে গিয়েছে। তাই নতুন প্রক্রিয়ায় সমস্ত নিয়ম শেষ করতে সময় লাগবে। সমস্ত আবেদন জমা পড়লে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

তিনি জানিয়েছেন, আবেদন পেলে সেগুলিকে যাচাই করতে এলাকায় যেতে হবে। তারপর তা মিলিয়ে দেখে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করবেন তাঁরা। এরপরে তা দফতরে পাঠানো হলে, ট্রেজারির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। তাই তাতে সময় লাগবে। তাড়াহুড়োতে করা সম্ভব নয়।

শুক্রবার আমবাড়ি এলাকায় নতুন করে হাতির হানার ঘটনা ঘটায় সেখানেও ক্ষতিপূরণের দাবি উঠেছে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন