হিলি সীমান্ত

নজরদারি সত্ত্বেও চলছে চোরা পারাপার

দক্ষিণ দিনাজপুরের কাঁটাতারহীন হিলি সীমান্তের দক্ষিণপাড়ার পাশেই আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। সেখান দিয়ে রোজই পাসপোর্ট ভিসা দেখিয়ে সীমান্ত পারাপার চলে। আর তার পাশেই দক্ষিণপাড়ার উন্মুক্ত সীমান্তে গলিপথ ধরে ‘ধাক্কা পাসপোর্টে’র (দালাল অর্থে প্রচলিত শব্দ) মাধ্যমে একই ভাবে চলছে পারাপার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিলি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

দক্ষিণ দিনাজপুরের কাঁটাতারহীন হিলি সীমান্তের দক্ষিণপাড়ার পাশেই আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট। সেখান দিয়ে রোজই পাসপোর্ট ভিসা দেখিয়ে সীমান্ত পারাপার চলে। আর তার পাশেই দক্ষিণপাড়ার উন্মুক্ত সীমান্তে গলিপথ ধরে ‘ধাক্কা পাসপোর্টে’র (দালাল অর্থে প্রচলিত শব্দ) মাধ্যমে একই ভাবে চলছে পারাপার।

Advertisement

বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর বিএসএসএফ এবং পুলিশের কড়াকড়ি বেড়েছে। কিন্তু তাতেও বন্ধ হয়নি চোরাপথে সীমান্ত পারাপার। হিলির দক্ষিণপাড়াই শুধু নয়, উজাল, হাড়িপুকুর, উত্তর আগ্রার মতো কাঁটাতারবিহীন এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হলেও অনুপ্রবেশ পুরো ঠেকানো যায়নি বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগেই উত্তর আগ্রায় যাত্রাপালার আড়ালে একদল অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়ে এ পারে। ন’জন ধরা পড়লেও বাকিদের হদিস মেলেনি। তবে খাগড়াগড় কাণ্ডের পর ‘ধাক্কা পাসপোর্টে’র দর বেড়েছে তিন থেকে চারগুণ।

গত সপ্তাহে বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ধৃত এক বাংলাদেশি যুবককে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, দু’পারের দালালদের ধরে হিলিতে ঢুকতে তার প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। অথচ এমনি সময়ে পাঁচশো থেকে হাজার টাকাতেই সীমান্ত পার হওয়া যেত। এখন তার দর বেড়ে হয়েছে অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার হাজার। তাও আবার লোক বুঝে অসুস্থ এবং বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে ছাড় আছে। সেখানে দু’হাজার থেকে তিন হাজারেই কাজ চলে যাবে। যেমন কুমারগঞ্জের বটুন কিংবা সাফানগর, সমজিয়া সীমান্ত দিয়ে একবার ওপার থেকে দালাল ধরে ঢুকে যেতে পারলে নিশ্চিন্ত। ওপারেই দশ থেকে পনের হাজার টাকা জমা দিলে এপারের কোনও এক বাড়িতে জামাই আদরে রাত্রিবাসের পর ভাড়ার ট্যাক্সি করে ফুলবাড়ি হয়ে গঙ্গরামপুর রোড ধরে সোজা মালদহ স্টেশন কিংবা সড়ক পথে বাস পাল্টে কলকাতা। ওই যুবকের কাছ থেকে অবশ্য তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। আদালত থেকে তার জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে। তবে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে কোনও নাশকতার সঙ্গে জড়িত বা সন্দেহভাজন জঙ্গি মিশে গিয়ে পারাপার করছে কি না, তার কোনও সঠিক তথ্য পুলিশ বা বিএসএফের কাছে নেই। এমনকি সন্দেহভাজন ধৃতদের জেরা করা বা তদন্ত করার মতো পরিকাঠামোও এখানে নেই বলে স্বীকার করেছেন পুলিশ কর্মীদের একাংশ। যদিও হিলি সীমান্ত জঙ্গিদের জন্য খুবই নিরাপদ করিডর বলে আগেই রাজ্যকে সতর্ক করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বছর তিনেক আগেও চোরাপথে হিলি সীমান্ত পারাপারের সময়ে অনেক জঙ্গিই বিএসএফ ও পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে বলে রেকর্ড রয়েছে।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান কাণ্ডের পর থেকে প্রায় রোজই হিলি, বালুরঘাট-সহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাপথে আসা ৪ থেকে ৮ জন বিদেশি নাগরিক ধরা পড়েছে। বেশিরভাগই কাজের খোঁজে আসা মানুষ। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বেশিরভাগই এ পারে এসে বালুরঘাট হয়ে কলকাতা বা শিলিগুড়ি চলে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন