নয়া প্রকল্প সূচনায় বন্যামুক্তির আশা

করলা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে তিস্তা বাঁধের উপর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের প্রকল্পেও আর্থিক বরাদ্দ মঞ্জুরির ঘোষণা করলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচ দফতর জানিয়েছে, ১৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলপাইগুড়ি শহর ফি বছর বর্ষার সময়ে জলবন্দি দশা থেকে যেমন মুক্তি পাবে, তেমনই শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীর নাব্যতাও ফিরবে। বুধবার জলপাইগুড়িতে ওই প্রকল্পের সূচনা করেছেন সেচমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি ও মালবাজার শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২৭
Share:

বাঁধ পরিদর্শনে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সন্দীপ পাল।

করলা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে তিস্তা বাঁধের উপর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের প্রকল্পেও আর্থিক বরাদ্দ মঞ্জুরির ঘোষণা করলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সেচ দফতর জানিয়েছে, ১৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলপাইগুড়ি শহর ফি বছর বর্ষার সময়ে জলবন্দি দশা থেকে যেমন মুক্তি পাবে, তেমনই শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীর নাব্যতাও ফিরবে। বুধবার জলপাইগুড়িতে ওই প্রকল্পের সূচনা করেছেন সেচমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকেই প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ দেখতে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া মণ্ডলঘাট এলাকায় করলার মোহনায় পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন সেচমন্ত্রী।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের রূপায়ণের পরে করলা থেকে সহজেই জল তিস্তায় পড়বে। তাতে নদীতে জলবদ্ধতার সমস্যা মিটবে, নাব্যতাও ফিরবে। তিস্তা বাঁধের উপর দিয়ে হলদিবাড়ির বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা তৈরির প্রকল্পও মঞ্জুর করা হয়েছে। এক সময়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার পাঠানো এই বিকল্প রাস্তা তৈরি হলে, শহরে যানবাহনের চাপ যেমন কমবে তেমনই ডুয়ার্স থেকে হলদিবাড়ির একটি সরাসরি যোগাযোগের পথও খুলে যাবে।

Advertisement

সেচমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘ দিন থেকেই করলা অ্যাকশন প্ল্যানের কথা শুনছি। গত বছর কাজ শুরুর কথা ছিল কিন্তু আইনি জটিলতায় সম্ভব হয়নি। আগামী মার্চের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।” এ দিন বিকেলে বাঁধ সম্প্রসারণের কাজ দেখেন তিনি। দফতরের আধিকারিকদের কাছে প্রতিদিন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরের গোশালা মোড় থেকে করলার বাঁধ হয়ে, মণ্ডলঘাট এলাকায় তিস্তা বাঁধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে, বাঁধ বরাবর বিকল্প রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দীর্ঘদিন আগেই জমা পড়ে। ওই রাস্তা তৈরিতে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

গৌতমবাবু এ দিনের অনুষ্ঠানে বলেন, “করলা নদীর নাব্যতা বাড়াতে চর কেটে ফেলা হবে। মোহনাতেও নদী খাত উঁচু হবে। এর ফলে নাব্যতা বাড়বে।” পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “এই দুই প্রকল্পের জন্য দীর্ঘদিন লড়াই চালাতে হয়েছে। অবশেষে তা দিনের আলো দেখতে চলেছে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী।

অন্য দিকে, ডুয়ার্সে সেচ খালের আধুনিকীকরণ প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন সেচমন্ত্রী। সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের মহাবাড়ি দেওপানি লাগোয়া কিলকোট ইনডং ঝোরার সেচ খালের আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। ৮০০ মিটার দীর্ঘ এই সেচখালের মাধ্যমে ৩৪৫ হেক্টর কৃষিজমি সেচসেবিত এলাকার আওতায় আসবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।

এ দিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডা। সেচ দফতর থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এ দিন শিলিগুড়ির তিনবাতি এলাকায় তিস্তাসেচের প্রকল্প ভবনের সংস্কারের পরে উদ্বোধনও করেছেন সেচমন্ত্রী। ওই ভবন তৈরি করতে ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন