বন্ধ পাটকাপাড়া চা বাগানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে আরএসপি শ্রমিক সংগঠন। মঙ্গলবার দলের শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অশোকবাবু বলেন, “বাগানে ইতিমধ্যে অনাহার ও অনাহারজনিত কারণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। জ্বালানি, রেশন এক বছর ধরে বন্ধ। হাসপাতালে ওষুধ, চিকিৎসক নেই। আমরা রাজ্য সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে কেন্দ্র ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছি।” রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রীকের বিষয়টি জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
গত ১৬ নভেম্বর আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের পাটকাপাড়া চা বাগান বন্ধ করে মালিক পক্ষ চলে যান। ১৪০০ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার বিপাকে পড়েন। তাঁদের অনেকেই এখন নদীতে গিয়ে পাথর ভাঙার কাজ করছেন। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, বহু শ্রমিক কাজ পাচ্ছেন না। ঘরে ঘরে খাবারের অভাব। বাগানে ১৫ দফার রেশন বাকি। বেতনও বকেয়া। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদেরও টাকা বাকি। শ্রমিক আবাসগুলি ভেঙে পড়ছে। ঠান্ডার কষ্টে দেখার কেউ নেই। শ্রমিকদের অনেকেরই অভিযোগ, “বাগানের হাসপাতাল চালাচ্ছেন এক হাতুড়ে চিকিসক। বাগানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ নেই।”
সম্প্রতি শ্রম দফতর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকলেও সেখানে মালিক উপস্থিত না থাকায় বৈঠক ভেস্তে যায়। ইনটেকের চা শ্রমিক নেতা বাবলু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “পাটকাপাড়ার অবস্থা ভাল নয়। শীতকালে পাতা মিলবে না বলে মালিক বাগান ছেড়েছেন। দ্রুত বাগান চালু করা প্রয়োজন। আগামী বৃহস্পতিবার যুগ্ম শ্রম আধিকারিকের দফতরে ওই বাগান নিয়ে ফের বৈঠক হওয়ার কথা।”
আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক সমীরণ মণ্ডলের অবশ্য দাবি, “বাগানে খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্ত্যোদয় যোজনায় শ্রমিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।”