লোকসভা নির্বাচনের আগে সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে এই বার আরও কঠোর হচ্ছে বিএসএফ। হলদিবাড়ি থেকে রাজগঞ্জে গাদরা পর্যন্ত সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়ার ও পারে অবস্থিত চা বাগান ও খেতে কাজ করতে যাওয়া চা শ্রমিকদের জন্য বিএসএফ থেকে পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এখন থেকে এই ব্যবস্থা বরাবরের জন্যে চালু থাকবে। বিএসএফ-এর মুখপাত্র নন্দিশ কুমার জানিয়েছেন, এখন থেকে বিএসএফের পরিচয়পত্র দেখিয়ে নাম নথিভুক্ত করে কাঁটা তারের বেড়ার ও পারে যেতে হবে। জেরক্স কপি চলবে না। আমরা অনুপ্রবেশ রুখতে চাই।” বিএসএফের তরফে কিছু দিন আগে এ কার্ড তৈরির কথা ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে প্রচার করা হয়। যাদের পুরোনো কার্ড আছে তাদের নবীকরণ করাতে বলা হয়। শুক্রবার নথিপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। কাঁটা তারের বেড়ার ও পারে জমি ও চা বাগানের মালিকদের তাদের জমির তথ্য, দলিলের জেরক্স কপি জমা দিতে হয়েছে। যে সমস্ত শ্রমিক ও জমির মালিক কাঁটা তারের বেড়ার ও পারে যাতায়াত করবেন তাদের তিন কপি ফটো ও ভোটার পরিচয়পত্র বা আধার কার্ডের কপি জমা দিতে হয়। ওই তথ্যের ভিত্তিতে কার্ড তৈরি হবে।
কাটা তারের বেড়ার ওই পারে দেড়শো মিটার ভারতীয় ভূখন্ড আছে। এই জমিতে প্রচুর ছোট চা বাগান আছে। কেবলমাত্র বেরুবাড়ি এলাকায় এই রকম চা বাগানের সংখ্যা ১৩৪টি। সেখানে প্রচুর শ্রমিক কাজ করেন। এ ছাড়া আবাদি জমি আছে। সেই সব জমির ভারতীয় মালিকেরা প্রতি দিন সকাল, দুপুর এবং বিকেলে গেটের মধ্যে দিয়ে ভোটার পরিচয় পত্রের জেরক্স কপি দিয়ে যাতায়াত করতেন। তাতে অনেককে চেনা যেত না। নগর বেরুবাড়ি এবং দক্ষিণ বেরুবাড়ির কিছু অংশে কাঁটাতারের বেড়া নেই। তাই কোনও বিতর্কে না গিয়ে নিজেদের দেওয়া পরিচয়পত্র নিয়ে যাতায়াত কার্যকর করছেন বিএসএফ কর্তৃপক্ষ।
বিএসএফের এ ব্যবস্থাকে স্বাগত জানান বেরুবাড়ির ক্ষুদ্র চা-চাষিদের সংগঠন নবজাগরণ চা চাষি সমিতির সম্পাদক দিলীপ দাস। তিনি বলেন, “বেরুবাড়ি এলাকার চা বাগানগুলিতে যাঁরা কাজ করেন তাদের সুবিধা হবে। আমরা এই ব্যবস্থা স্বাগত জানাচ্ছি।” জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি রাখি বর্মন ও হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাহিনুর সরকার বলেন, “সীমান্তে ওই পারে জমিতে যেতে এত দিন ভোটার কার্ড ব্যবহার হত। বিএসএফ যে ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে তাতে সীমান্তের বাসিন্দাদের হয়রানি অনেক কমবে।”