প্রহরা শিথিল, অনুপ্রবেশ চলছে অবাধে

পাকা সীমান্ত সড়কের ধারে কোথাও কাঁটাতার, কোথাও বা বাঁশের বেড়া। কোথাও বা সেইটুকুও নেই। খালি পড়ে রয়েছে সীমান্ত। ফলে বাঁশের বেড়ার ফাঁক গলে, বা কোনও বাধা ছাড়াই ও পার বাংলা থেকে কোনও বাধা ছাড়াই ঢুকে পড়ছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের উত্তর আগ্রা এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিলি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

পাকা সীমান্ত সড়কের ধারে কোথাও কাঁটাতার, কোথাও বা বাঁশের বেড়া। কোথাও বা সেইটুকুও নেই। খালি পড়ে রয়েছে সীমান্ত। ফলে বাঁশের বেড়ার ফাঁক গলে, বা কোনও বাধা ছাড়াই ও পার বাংলা থেকে কোনও বাধা ছাড়াই ঢুকে পড়ছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের উত্তর আগ্রা এলাকায়।

Advertisement

শুক্রবার রাতেই যাত্রাপালা দেখার নাম করে এপারে বেশ কিছু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে সাত জনকে ধরা গেলেও, বাকিদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। যদিও হিলি ও বালুরঘাটের প্রধান সড়ক ও বাসস্টপে পুলিশের তরফে কড়া নজরদারি ছিল। জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার উত্তম ঘোষ বলেন, “হিলির ওই আগ্রা সীমান্তে বিএসএফকে নিয়ে রাতে অভিযান চালানো হবে।”

ওই এলাকায় সীমান্ত সড়ক জুড়ে এক কিলোমিটার অন্তর একজন করে জওয়ান পাহারায় রয়েছেন। ওই উত্তর আগ্রা সীমান্তে রাতে যাত্রাপালায় মহিলাদের আলকাপ নাচের আসরে বাসিন্দাদের সঙ্গে আসেন জওয়ানেরাও। সেই সুযোগেই ওই নড়বড়ে বাঁশের বেড়া টপকে ভিড়ে মিশে গিয়ে দল বেঁধে ওপার থেকে এ পারে এসেছিল বলে স্বীকার করেছে ধৃত ওই অনুপ্রবেশকারীরা। তার পরেই শনিবার হিলির ত্রিমোহিনী এলাকাতে গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে যায় তারা। রবিবার বিএসএফের মাধ্যমে হিলি থানা অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা দায়ের করে ধৃতদের বালুরঘাট আদালতে পাঠায়। এ দিন বালুরঘাটের মুখ্য বিচারবিভাগীয় কোর্টের বিচারক অদিতি ঘোষ ধৃতদের ১ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার বলেন, “ধৃতরা যাত্রাপালা দেখতে ওই এলাকা দিয়ে এপারে অনুপ্রবেশ করেছিল বলে জানিয়েছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের মোবাইল, সিমকার্ড এবং বাংলাদেশি ও ভারতীয় কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ রিপন বাবু, নুরনবি মোল্লা, বাবলু মণ্ডল, মহম্মদ মোতালেব মণ্ডল, মামুন মোল্লা, আলম মোল্লা বাংলাদেশের দিনাজপুরের দাউদপুর এবং মহম্মদ গুলজার চৌঘরিয়ার বাসিন্দা।”

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, দলটি উত্তর আগ্রা বিএসএফ ফাঁড়ি থেকে ভীমপুর বিএসএফ ফাঁড়ি পেরিয়ে ত্রিমোহিনীর ঈশ্বরপাড়ায় ঢুকেছিল। তাদের সঙ্গে ঢুকে পড়া আরও জনা চল্লিশেক অনুপ্রবেশকারীর কোনও হদিস পুলিশ ও বিএসএফ কেউই পায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই উত্তর আগ্রা সীমান্ত থেকে পাঞ্জুল এবং লস্করপুর হয়ে হিলি-বালুরঘাট সড়কে ওঠা যায়। সড়ক পথে বালুরঘাট কিংবা পরিতামের দিকে এগোনো অথবা ফের চোরাপথ টপকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়াএই দু’টি পথ তো রয়েইছে। তা ছাড়াও কোনও নিশ্চিন্ত ডেরার আশ্রয়ে লুকিয়ে, পরে পরিস্থিতি বুঝে একে একে সরে পড়তে পারে তারা।

এদিন বিএসএফের হিলির কমান্ডার সংগ্রাম বিসওয়াল বলেছেন, “তল্লাশি ও নজরদারি চলছে।” হিলির বিডিও মথিয়াস লেপচা বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নতুন করে নাম তোলার জন্য ১০১টি আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে দুটি বিদেশি নাগরিকের আবেদন পত্র রয়েছে বলে জেনেছি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ব্লকের একটি বিশেষ টিম বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরে তিনি নিজে এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে আশ্বস্ত হলেই ভোটার তালিকায় নাম তোলা হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement