পুলিশ ফুটবলে সেরা পঞ্জাবের শেররা

‘শের-এ-পঞ্জাব’-দের উল্লাসে ঢাকা পড়ে গেল সীমান্ত সুরক্ষা বলের জওয়ানদের গর্জন। শিলিগুড়ির রানিডাঙ্গার এসএসবি ময়দানে ৬৪ তম বিএন মল্লিক সারা ভারত পুলিশ ফুটবলের ফাইনালে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই ততক্ষণে মাঠের দখল নিয়েছে গুটিকয় পঞ্জাবি।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায় l

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:৪৮
Share:

সারা ভারত পুলিশ ফুটবলের ফাইনাল খেলা চলছে শিলিগুড়িতে।

‘শের-এ-পঞ্জাব’-দের উল্লাসে ঢাকা পড়ে গেল সীমান্ত সুরক্ষা বলের জওয়ানদের গর্জন। শিলিগুড়ির রানিডাঙ্গার এসএসবি ময়দানে ৬৪ তম বিএন মল্লিক সারা ভারত পুলিশ ফুটবলের ফাইনালে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই ততক্ষণে মাঠের দখল নিয়েছে গুটিকয় পঞ্জাবি। মাঠে তখন পাগলের মত ডিগবাজি খাচ্ছেন, একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন, প্রথমবার ভারত সেরা হওয়ার আনন্দের আতিশয্যে তাঁরা ততক্ষণে প্রোটোকল ভুলে গিয়েছেন। তাঁদের মনে তখন শুধুই যুদ্ধ জয়ের তৃপ্তি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন বিএসএফকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৬৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ট্রফি ঘরে তুলল পঞ্জাব পুলিশ। পড়ে আসা বিকেলের আলোয় আতসবাজির রোশনাই। অন্য দিকে শেষ মূহূর্তে পেনাল্টি বাইরে মেরে বিএসএফের গোটা দল তখন আলোর নীচের অন্ধকারের মত মাঠের কোণে মিশে যাচ্ছে। হাড্ডাহাড্ডি খেলা দেখে আপ্লুত হাইপ্রোফাইল দর্শক ভাইচুং ভুটিয়া, রেনেডি সিংরা ততক্ষণে মুগ্ধ। খেলা শেষে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে ভাইচুং অকপটে জানালেন সমস্ত পুলিশ দলগুলির মধ্যে থেকে একটা দল তৈরি করে সেগুলি সন্তোষ ট্রফিতে খেলতে চাইলে তিনি তাঁর ব্যবস্থা করবেন ফেডারেশনকে বলে। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রথমবার পুলিশ ফুটবল দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এখানে অনেকেরই প্রতিভা রয়েছে বলে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যে থেকে ২০ বা ২৫ জনকে বেছে নিয়ে একটা দল করা যেতে পারে। এ ব্যপারে পুলিশ চিন্তাভানা করলে আমি সাহায্য করতে রাজি। তাঁদের কোচ হিসেবে আইএম বিজয়ন বা কুলজিৎ সিংহের মত খেলোয়াড়কে ব্যবহার করা যেতে পারে।’’ তিনি নিজেই অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন(এআইএফএফ)-এর সঙ্গে কথা বলে তাঁদের রাজি করানোর দায়িত্ব নেবেন বলে জানান। তাঁর প্রস্তাবে খেলোয়াড়দের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়।

Advertisement

এদিন খেলার ফল পঞ্জাবের পক্ষে হলেও, একাধিক সুযোগ নষ্ট হয় বিএসএফের পক্ষেও। ম্যাচের নির্ধারিত নব্বই মিনিট তখন শেষ। ইনজুরি টাইমে মরিয়া হয়ে রাইড উইং দিয়ে বল নিয়ে ঢুকছিল বিএসএফ স্ট্রাইকার। পিছু ধাওয়া করে যখন বল বক্সে পৌঁছে গিয়েছে, মরিয়া হয়ে এসএসবির ডিফেন্ডার পিছন থেকে পা চালিয়ে দেন। নিজে হলুদ কার্ডের বিনিময়ে হলেও তাঁর সেই প্রয়াস আখেরে দলের লাভই হয়। এমনিতেই রানিডাঙ্গার তিস্তা স্টেডিয়ামের মাঠ ছোট। গোল পোস্টের উচ্চতাও কম। ফলে পেনাল্টি থেকেও গোল করা সহজ নয়। সম্ভবত সেই আতঙ্ক থেকেই বিএসএফের কমল কিশোর বারেই বল রাখতে পারেননি। আফটার শক কাটার আগেই ম্যাচ শেষ। ফলে সেই ক্ষতি আর পূরণ করা যায়নি।

এদিন শুরু থেকেই তেড়েফুঁড়ে খেলতে নামে পঞ্জাব পুলিশ। শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে একটা ফ্রি কিক সবাইকে পরাস্ত করেও বারে লেগে ফিরে আসে। তারপর দু’পক্ষই একাধিক সুযোগ তৈরি করেও নষ্ট করে। প্রথমার্ধের ৩৪ মিনিটে নিজেদের মধ্যেকার বোঝাপড়াকে গোলে পরিণত করে পঞ্জাব। তাঁদের হরজিন্দর সিংহ গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এই অর্ধে আর কোনও গোল হয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে অনেক সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলতে শুরু করে বিজিত দলটি। এই অর্ধে কিন্তু ছন্দ হারায় পঞ্জাব পুলিশ। তবে বিএসএফের আক্রমণের ঝাঁঝ পিকে করতে রক্ষণে লোক বাড়াতে দেখা যায় তাঁদের। এই অর্ধে মূলত খেলা হয়েছে বিএসএফের আক্রমণ ও পঞ্জাব পুলিশের রক্ষণের। তবে আসল কাজটি করতে পারেনি সীমান্ত সুরক্ষা বল বাহিনী। ফলে গতবারের সেরাদের এবার রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে এসএসবি। আটটি গোল করে বিএসএফের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন পি কে তিওয়ারি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন