পুলিশকর্তার সঙ্গে সংঘাত, মালদহে ধৃত ১৫ গ্রামবাসী

এলাকায় দুষ্কৃতীদের হামলা চলছে দিন কয়েক ধরে। সেই আতঙ্কে মালদহের ইংরেজবাজারের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়ামতপুরে রাত পাহারার দল তৈরি করেছেন গ্রামবাসীরাই। সোমবার রাতে টহল দিতে বেরিয়ে তেমনই একটি দলকে মানিকচক রাজ্য সড়কের উপরে দেখেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী। গ্রামবাসীদের হাতে হাঁসুয়া থাকায় তাঁদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৫১
Share:

এলাকায় দুষ্কৃতীদের হামলা চলছে দিন কয়েক ধরে। সেই আতঙ্কে মালদহের ইংরেজবাজারের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিয়ামতপুরে রাত পাহারার দল তৈরি করেছেন গ্রামবাসীরাই। সোমবার রাতে টহল দিতে বেরিয়ে তেমনই একটি দলকে মানিকচক রাজ্য সড়কের উপরে দেখেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী। গ্রামবাসীদের হাতে হাঁসুয়া থাকায় তাঁদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন তিনি। অভিযোগ, ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা তখন অভিষেকবাবুর গাড়ির দিকে ইট ছোড়েন। তিনি প্রথমে এলাকা ছেড়ে চলে যান। পরে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে ওই গ্রামের ১৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৩৫৩ ও ৩৩২ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

গত শুক্রবার নিয়ামতপুর থেকে এক কিলোমিটার মতো দূরে শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদিয়া বাঁধাগাছ গ্রামের ৬ বাসিন্দার বাড়িতে লাল খামে মোড়া হুমকি চিঠি ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। তাতে লেখা ছিল, ওই বাড়িগুলিতে ডাকাতি করা হবে। সে দিন থেকেই এলাকার প্রায় সব ক’টি গ্রামেই রাত পাহারা শুরু হয়ে যায়। সেই রাতেই মাদিয়া বাঁদাগাছের রাত পাহারা দলের হাতে ধরা পড়ে তিন যুবক। তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। তারপরে শনিবার গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা একটি ছোট গাড়িতে চেপে কাছেই চণ্ডীপুর ও দামোদরপুরে সাধারণ বাসিন্দাদের উপরে বোমা ছোড়ে। বোমায় এক ব্যক্তি মারা যান। এক কিশোর সহ চার জন আহত হন। এর পরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রবিবার সকাল থেকে মালদহ মানিকচক সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠি চালায় বলেও এলাকার মানুষের অভিযোগ।

শোভাপুর হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ইউনিস মোমিন বলেন, “এলাকার মানুষ দুষ্কৃতীদের আতঙ্কে অতিষ্ঠ। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও রয়েছে। তার মধ্যেই পুলিশ কর্তা রাত পাহারা দলের লোকদেরই গ্রেফতার করতে বলায় গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”

Advertisement

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেকবাবু অবশ্য বলেন, “বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে গাড়ি থামায়। হাতে হাঁসুয়া থাকায় তাঁদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ দিলে তাঁরা ইট ছুড়তে শুরু করেন। তাই তাঁদের পরে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, গ্রামবাসীরা যে ভাবে গাড়ি থামাচ্ছিলেন, তাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তা ছাড়া, কয়েকজন গ্রামবাসীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেও তাঁর অভিযোগ। তবে তেমন কোনও মামলা ধৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়নি। ধৃতদের ৭ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।

মালদহে প্রায় মাস খানেকের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের একাধিকবার সংঘাত ঘটেছে। সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুরে থানার আইসি-কে মারধরের অভিযোগও উঠেছিল। জেলার কোথাও কোথাও কেন পুলিশ-গ্রামবাসী সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন