সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই রাজ্যে চালু হতে চলেছে নতুন দু’টি কমিউনিটি রেডিও স্টেশন। কমিউনিটি রেডিও সার্ভিস চালুর জন্য ইতিমধ্যে দার্জিলিং পাহাড় থেকে দু’টি আবেদনপত্র কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকে জমা পড়েছে। এই স্টেশন দু’টি চালু হলে রাজ্যে মোট পাঁচটি কমিউনিটি রেডিও চলবে। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং এনএসএইচএম কমিউনিটি রেডিও চালু করেছে। এ বার দার্জিলিঙের লেপচা সম্প্রদায় এবং কালিম্পঙের সেলসিয়ান কলেজ ওই রেডিও ব্যবস্থা চালু করবে।
সম্প্রতি দার্জিলিঙের ঘুমে একটি বেসরকারি অতিথিনিবাসে কমিউনিটি রেডিও নিয়ে একটি তিনদিনের কর্মশালা শুরু হয়েছে। সেখানে ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড’ সংস্থার আধিকারিক তেজ প্রকাশ যাদব জানান, আমাদের দেশে ১৬৬টি কমিউনিটি রেডিও চালু হয়েছে। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক এই সংখ্যা বাড়াতে চায়। তাই এই ধরনের কর্মশালা ও সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “পাহাড়ে সেলসিয়ান কলেজ এবং লেপচা’রা এই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছেন। প্রাথমিকভাবে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ছাড়পত্র পেয়েছেন। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক কমিউনিটি রেডিএ-র জন্য দ্বাদশ বর্ষ পরিকল্পনায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে।” উল্লেখ্য, ওয়ান ওয়ার্ল্ড সংস্থার কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রীকের একটি নোডাল এজেন্সি হিসাবে বিষয়টি নিয়ে গোটা দেশে কাজ শুরু করেছে।
কমিউনিটি রেডিও সার্ভিস কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের একটি প্রকল্প। পাবলিক ব্রডকাস্টিং এবং কর্মাশিয়াল ব্রডকাস্টিং-এর পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিও-র কথা এ দেশে ৯০ দশকে প্রথমে সামনে আসে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকার এই ব্যবস্থা চালু করার উপরে জোর দেয়। তবে ২০০২ সাল থেকে কমিউনিটি রেডিও দেশে বিস্তার লাভ করে। এর মাধ্যমে মূলত কোনও সম্প্রদায়, গোষ্ঠী বা ছাত্রদের নিজস্ব ভাবনা, মতামত প্রকাশের সুযোগ পায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠী মূলত এই ব্যবস্থার মাধমে নিজেদেরকে সমাজের সামনে তুলে ধরে। মূলত, চিরাচরিত রেডিও ব্যবস্থার মাধ্যমে ওই কাজ ভালভাবে সব সময় করা সম্ভব না হওয়ায় কমিউনিটি রেডিওকে অগ্রাধিকার দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সংস্থা সূত্রের খবর, পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজকর্ম শেষ করে পাহাড়ের ওই দু’টি কমিউনিটি রেডিও ব্যবস্থা চালু হতে আরও ১১ মাস সময় লাগবে। তার পর থেকেই তারা সম্প্রচার শুরু করে দেবে। আলাদা ভাবে ওয়্যারলেস অপারেটিং লাইসেন্সও নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা গোষ্ঠীকে। এর জন্য তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক ছাড়াও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতিও প্রয়োজন হয়। সামাজিক বিষয় ভিত্তিক সম্প্রচারের মাধ্যম হিসাবে কমিউনিটি রেডিও ১০-১৫ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে কাজ করে। একটি স্টেশনের পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৭ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ খরচ হয়। কেন্দ্রীয় সরকার সেই টাকার ৫০ শতাংশ দিয়ে থাকে।