পাহাড়ের ভোট গণনাকেন্দ্র দার্জিলিঙেই

পাহাড় থেকে সমতলে ভোট গণনা কেন্দ্র সরানো নিয়ে নানা অভিযোগ, বিতর্কের মুখে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের প্রস্তুতি আগেই নিয়েছিল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেলে দার্জিলিঙে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল, পাহাড়ের তিন মহকুমার বোট গণনা কেন্দ্র দার্জিলিং শহরেই হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৪ ০১:২৮
Share:

পাহাড় থেকে সমতলে ভোট গণনা কেন্দ্র সরানো নিয়ে নানা অভিযোগ, বিতর্কের মুখে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের প্রস্তুতি আগেই নিয়েছিল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। শনিবার বিকেলে দার্জিলিঙে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল, পাহাড়ের তিন মহকুমার বোট গণনা কেন্দ্র দার্জিলিং শহরেই হবে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক তথা ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার পুনীত যাদব বলেন,“বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আপত্তির কথা মাথায় রেখে ভোটগণনা কেন্দ্র পাহাড় থেকে সমতলে সরানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের মত চাওয়া হয়। তখনই দার্জিলিঙের ভানু ভবনে (যেখানে জিটিএ সভা হয়ে থাকে) গণনা কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই মতো অনুমতি মিলেছে। কমিশন আগামী ২০ মে পর্যন্ত ভানু ভবন ব্যবহার করবে। জিটিএ-এর কাছ থেকে অনুমতিও পাওয়া গিয়েছে।”

Advertisement

ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রথম নির্বাচন কমিশনের কাছে আপত্তি জানিয়েছিল। সিপিআরএম, গোর্খা লিগ সহ পাহাড়ে ৮টি রাজনৈতিক দলের পক্ষে অনেকেই ওই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছিল। দার্জিলিঙে এত জায়গা থাকতে সমতলে গণনা কেন্দ্র সরানোর সিদ্ধান্তের আড়ালে ‘রাজনীতি’ থাকতে পারে বলেও সকলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের খবরে মোর্চা, সিপিআরএম সহ পাহাড়ের রাজনৈতিক দলের তরফে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরাই প্রথম নির্বাচন কমিশনকে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করানোর জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তা হওয়ায় আমরা খুশি।” সিপিআরএমের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী জানান, ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের আবেগে আঘাত লাগত। সিপিআরএম মুখপাত্র বলেন, “গোর্খা ভবন তো রাতারাতি হয়নি। সেটার কথা আগে ভাবা যেত। তা হলে এত অভিযোগ, বিতর্কের মুখে পড়তে হতো না জেলাশাসককে।”

এই প্রসঙ্গে দার্জিলিঙের জেলাশাসক ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, “পাহাড়ে আগে সেন্ট যোশেফ কলেজে গণনা হতো। কলেজ কর্তৃপক্ষ গণনা কেন্দ্র গড়ার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে জিতেছেন। সেখানে আমরা করতে না পেরে অনেক জায়গা খুঁজেছি। কিন্তু পাইনি। তখন গোর্খা ভবনের কথা ভাবা হলেও তা যে হেতু জিটিএ ব্যবহার করে সে জন্য পাওয়া যাবে কি না তা স্পষ্ট ছিল না। ভানু ভবনে গণনা কেন্দ্র হলে অন্য দলগুলি আপত্তি করবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। এখন সব দলের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সম্মতিও মিলেছে।” তবে ভোটের মুখে এভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের অন্দরেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে। প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, তড়িঘড়ি ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা থেকে পিছিয়ে আসায় ভোটের মুখে প্রশাসনের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও বিপন্ন হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আরেকটি অংশের ধারনা, ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসন স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন