স্নাতক স্তরের পরীক্ষা চলাকালীন কলেজে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের একাংশের খাতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। শনিবার এই অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ কলেজে। খবর পেয়ে কালিয়াগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ বাহিনী কলেজে গিয়ে বহিরাগতদের তাড়া করে কলেজের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এরপর পরীক্ষার্থীদের খাতা ফিরিয়ে দিয়ে ২০ মিনিট অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজের পড়ুয়াদের পরীক্ষা কেন্দ্র কালিয়াগঞ্জ কলেজ। দুটি কলেজেরই ছাত্র সংসদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে। এ দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। কালিয়াগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ পীযূষ দাস বলেন, “কোন ছাত্র সংগঠনের সমর্থকেরা পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নিয়েছিল, তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।” কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এদিন পরীক্ষার পাশাপাশি স্নাতক স্তরের ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের কাউন্সিলিং ছিল। অধ্যক্ষ বলেন, “সেই সুযোগেই বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের খাতা লুঠ করার চেষ্টা করে।”
কলেজ সূত্রের খবর, এদিন দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত প্রথম বর্ষের সাধারণ বিভাগে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। কলেজের দোতলার ২৪ নম্বর ঘরে ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজের ৭৬ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। বিকেল পোনে চারটা নাগাদ বহিরাগত একদল ছাত্র ওই ঘরে গিয়ে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সামনেই ১০ জন পড়ুয়ার খাতা কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। খাতা নিয়ে শিক্ষকের সামনে থাকা টেবিলের উপর রেখে দেয় বলে অভিযোগ। পরীক্ষার্থীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলে দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। এরপরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার ও জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তর দাবি, শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কিছু সমর্থক বুনিয়াদপুর কলেজে পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে নকল করতে বাধা পায়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুটি কলেজের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। সেই ক্ষোভেই এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা কালিয়াগঞ্জ কলেজে কাউকে নকল করতে দেবে না বলে দাবি করে পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নেয়। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “এসএফআই ও ছাত্র পরিষদের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা তৃণমূল পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদের নামে বদনাম রটাতেই এই চক্রান্ত করেছে।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর কলেজে নকল ধরার জেরে ছাত্রদের একাংশের হামলা বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের রেশ কাটেনি এখনও। শনিবারও বুনিয়াদপুর কলেজে নকল করার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের মোট ৩১ জন ছাত্রছাত্রীর খাতা কেড়ে নেওয়া হয়।