মাইক বাজিয়ে চলছে অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে পুরনো সিলেবাসের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার আগে বুধবার রাতে বিধি ভেঙে মাইক বাজিয়ে সরকারি অনুষ্ঠান হল চাঁচলে। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের এই গম্ভীরা উত্সবকে ঘিরে বিধিভঙ্গের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, বিস্মিত জেলা প্রশাসনের একাংশও।
প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা মাঠে আয়োজিত সরকারি উত্সবে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতে বিধি ভেঙে এদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইক বাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার আগে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে ওই উত্সবের জেরে এলাকার পরীক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। সরকারি ওই উত্সবের উদ্যোক্তারা কীভাবে বিধি ভেঙে ওই অনুষ্ঠান করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিস্তারিত জানতে মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমা প্রশাসনের তরফে ঘটনাটিকে অবশ্য অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে খোলাখুলিভাবে স্বীকার করে নিয়ে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে।
চাঁচলের এসডিপিওর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সারাক্ষণ হাজির ছিলেন মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস। সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। তবে পরীক্ষা চলাকালীন আর যাতে এধরণের ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।” এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আর্চায অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মালদহের জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, “বিষয়টি অতিরিক্ত জেলাশাসক দেখছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মন্ডল বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। বুধবার থেকেই মাইক বাজানোয় বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। মহকুমাশাসকের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ওই উত্সবের আয়োজক। বিভিন্ন ব্লকে গম্ভীরা উত্সব পালনের পর মহকুমা পর্যায়ে এই উত্সবকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই চলছিল নানান প্রস্তুতি। অনুষ্ঠান স্থলের চারপাশে ২৫ মিটার দূরে কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী স্কুল, মহকুমাশাসকের দফতর ও আদালত রয়েছে। এ ছাড়া ওই মাঠের পাশেই রয়েছে জনবসতি। সকাল থেকে চাঁচলের চৌরাস্তা ও নেতাজি মোড়ে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠানের প্রচার চালানো হয় বলেও অভিযোগ।
বিকেল চারটে থেকে শুরু হয় উত্সব। উত্সবের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায়। অংশ নিয়েছিল মালদহের তিনটি গম্ভীরা দল। মঞ্চের সামনে তিনটি করে সাউন্ড বক্স ছাড়াও দুদিকে রাখা হয়েছিল পাঁচটি করে মোট দশটি বড় আকারের মাইক। নাচ ও গানের মাধ্যমে উচ্চস্বরে সরকারি নানা প্রকল্প নিয়ে প্রচার করেন গম্ভীরা শিল্পীরা। বিকাল চারটা থেকে শুরু হয়ে উত্সব শেষ হয় রাত দশটায়। যার জেরে সন্ধের পড়াশোনা শিকেয় উঠল এলাকার পরীক্ষার্থীদের।