পরিবেশ রক্ষায় ক্লাবকে পাশে চায় পুরসভা

শহরের পরিবেশ রক্ষায় ক্লাবগুলির সঙ্গে জোট বাঁধতে চাইছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। এরজন্য পুজোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের বিগ বাজেটের অথবা মাঝারি পুজো মণ্ডপগুলিতে এতদিন প্ল্যাস্টিক নিয়ে পুরসভার বার্তা দেখা যেত। এবার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রচার চালাতে শহরের সব ধরণের পুজো কমিটিকে পাশে পেতে চাইছে পুরসভা।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১১
Share:

শহরের পরিবেশ রক্ষায় ক্লাবগুলির সঙ্গে জোট বাঁধতে চাইছে জলপাইগুড়ি পুরসভা। এরজন্য পুজোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরের বিগ বাজেটের অথবা মাঝারি পুজো মণ্ডপগুলিতে এতদিন প্ল্যাস্টিক নিয়ে পুরসভার বার্তা দেখা যেত। এবার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রচার চালাতে শহরের সব ধরণের পুজো কমিটিকে পাশে পেতে চাইছে পুরসভা।

Advertisement

শহরের সব পুজো কমিটিকে পোস্টার হোর্ডিং দিয়ে পুরসভাকে সাহায্য করার আর্জি জানানো হবে। সেই সঙ্গে পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্প লাইন চালুও হবে। কোথাও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বা শুয়োর ঘুরতে দেখলে, হেল্প লাইনের নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন বাসিন্দারা। এবারে পুরসভার পুজোর পুরস্কারেও পরিবেশকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “পরিবেশ নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সে কারণেই প্ল্যাস্টিক নিয়ে এতদিন পুরসভা প্রচার করেছে, এবার তার সঙ্গে পুরো পরিবেশকেই জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পুজোর সময় থেকেই সকলকে একজোট করার প্রস্তুতি শুরু হবে।”

কী করতে চাইছে পুর কতৃর্পক্ষ?

Advertisement

সম্প্রতি এনসেফল্যাইটিসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই অপরিচ্ছন্নতা এবং দূষণ নিয়ে শহরে ক্ষোভ তৈরি হয়। নিয়মিত আবর্জনা সাফ করা নিয়েও বাসিন্দারা সরব হন। সেই সময়েই পুর কতৃর্পক্ষ পরিবেশের সুস্থতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাসিন্দাদেরও সামিল করার সিদ্ধান্ত নেন। এই পরিকল্পনার রূপায়ণে পুজোর দিনগুলি থেকে ভাল সময় নেই বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

পুর আধিকারিকেরা জানান, শহরের সব এলাকাতেই পুজো হয়। সব এলাকার বাসিন্দাদেরই একসঙ্গে মণ্ডপে পাওয়া যায়। সে কারণেই প্রতি পুজো মণ্ডপে প্ল্যাস্টিকের ব্যাবহার বন্ধ করা-সহ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে কী কী করা উচিত সে সম্পর্কে প্রচার চালানো হবে। সেই সঙ্গে কোনও এলাকার অপরিচ্ছন্নতা দেখে কেউ যদি হেল্প লাইনে ফোন করেন তাহলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা বাসিন্দারা কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জানতে পারবেন। চেয়ারম্যানের কথায়, “এতে বাসিন্দারাও নিজেদের পুরসভার কাজকর্মের অর্ন্তভুক্ত হয়েছেন বলে ভাবতে পারবেন।’’

যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছরে জলপাইগুড়িতে পুরভোট হওয়ার কথা। চলতি বছরে দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান-সহ কংগ্রেস কাউন্সিলররা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যার সুবাদে গত ২০১০ সালের পুর ভোটে তৃণমূল মাত্র একটি আসন পেলেও, এখন তারাই ক্ষমতায়। আগামী বারেও পুরবোর্ডের ক্ষমতা ধরে রাখতে তাই জনসংযোগে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের কাউন্সিলর প্রমোদ মণ্ডলের অভিযোগ, “প্রতিবার এমন নানা কর্মসূচি করার নামে রাজনীতি করে থাকে পুরবোর্ড। শুধু টাকা খরচ হয়, কাজের কাজ কিছুই হয় না।”

পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোন এলাকায় পুজোর আগে বিশেষ সাফাই অভিযান হবে তাও মাইকে শহরবাসীকে জানানো হবে, তাতে সেইমত তাঁরা নিজেদের দোকান বাড়ি সাফাই করতে পারেন। খুব শীঘ্রই একটি নাম ঠিক করে বাসিন্দাদের সামিল করতে এই অভিযানের খুঁটিনাটি ঘোষণা করবেন পুর কর্তৃপক্ষ। বিরোধীদের অভিযোগ সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, “ওঁদের উপর তো শহরবাসী পুরসভার দায়িত্ব দেয়নি। তাই শহরের পরিবেশ নিয়েও হয়ত ওঁরা ভাবে না। সবকিছুতেই ওঁরা রাজনীতি দেখেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement