গ্রীষ্মে জলকষ্ট ছিল। তার পরে এক মাস কাটতে না কাটতেই শিলিগুড়ি পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফের জল অমিল। দু’দিন ধরে এইভাবে জল না আসায় নাজেহাল পুরসভায় ৩৯, ৪০, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ। এলাকার যে দু’একটি জায়গায় সামান্য জল পাওয়া যাচ্ছে তা কে আগে নেবে তা নিয়ে কার্যত মারামারি শুরু হয়েছে।
শনিবার সকালে জলের জন্য লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে হায়দরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এবং শ্রীমা সরণির একটি কলে। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের দেবশঙ্কর সাহা। তিনি বলেন, “তিনদিন ধরে সমস্যা হচ্ছে। গত দু’দিন তাও ক্ষীণ ধারায় জল পাওয়া যাচ্ছিল। এ দিন বেশিরভাগ কল থেকেই জল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। মানুষও মরিয়া হয়ে জল সংগ্রহে নেমে পড়েছে। আমাকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে সকলকে কিছু পরিমাণ জল নেওয়ার বন্দোবস্ত করতে হল।” পুর কমিশনারকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
পরেশনগরে জলের পাম্পে বসানো নতুন মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ার ফলেই এই সমস্যা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। মাত্র এক মাস আগেই ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই মেশিন লাগানো সত্ত্বেও কী ভাবে ফের খারাপ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব নিজে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)-র তহবিল থেকে অর্থ দিয়ে ওই মেশিন বসাতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ দিন সমস্যার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “সবচেয়ে ভাল মেশিন বসানো সত্বেও কেন তা খারাপ হয়ে গেল বুঝতে পারছি না। আমেদাবাদে বিশেষজ্ঞদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আসতে দু-একদিন সময় লাগবে। তার আগে কিছু করা সম্ভব নয়।” বিগত বাম ও কংগ্রেস পুরবোর্ডকে কাজে গাফিলতির জন্য দায়ী করেন তিনি।
যদিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকেই দুষেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “নতুন যন্ত্র ওঁরাই তো ঘটা করে বসালেন। এখন আগের আমলকে দোষ দিচ্ছেন।” তাঁরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে তাঁর দফতর ও এসজেডিএ থেকে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে জলের রিজার্ভার তৈরি করার জন্য জায়গা ও ১৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিলেন বলে দাবি অশোকবাবুর। সে কাজও বর্তমান সরকার শেষ করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। সাধারণ মানুষ দ্রুত জল না পেলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন বলেও জানান অশোকবাবু।