পুলিশবাহিনীর কড়া নজরদারিতে এ বার চাঁচলের সামসি কলেজে ঢুকতে পারেননি বহিরাগতেরা। ছবি: বাপি মজুমদার।
এবিভিপি ও এসএফআই প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল টিএমসিপির বিরুদ্ধে। মালদহের সামসি কলেজে সোমবারের ঘটনা। এর আগে বাগডোগরা কলেজেও শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছিল বিরোধীরা।
আগামী ২৯ জানুয়ারি মালদহের কলেজগুলিতে ভোটের দিন স্থির হয়েছে। সোমবার ছিল ওই কলেজে মনোনয়নপত্র তোলার দিন। কলেজের ভিতরে ওই ঘটনার জেরে বাইরে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন দুই ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। এসএফআই ও এবিভিপির কয়েকজন কর্মী একসময় ব্যরিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধ্বস্তাধ্বস্তিও বাধে। এবিভিপির সামসি অঞ্চল কমিটির সভাপতি লক্ষ্মণ সাহার অভিযোগ, পুলিশের সামনেই আমাদের পাঁচ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলেছে টিএমসিপি। পুলিশকে বলেও ফল হয়নি। টিএমসিপির পাশাপাশি পুলিশের তরফেও মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে।
এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি অমিত ঝাঁ বলেন, “টিএমসিপি আমাদের তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেললেও পুলিশ নীরব ছিল। জিততে পারবে না জেনে এ বছরও ওরা নির্বাচন ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বাসিন্দারাও এবার জোট বেঁধেছে দেখে গণ্ডগোল পাকানোর সাহস করেনি।” নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। গত বছরও মনোনয়ন তোলাকে কেন্দ্র করে ওই কলেজে বোমা-গুলি চলে। যার জেরে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। সংঘর্ষে দুপক্ষের ৩০ জন জখম হন। তাদের মধ্যে এক কিশোরও ছিল। ঘটনার জেরে কলেজে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। তারপর আর ওই কলেজে নির্বাচন হয়নি। দিনকয়েক আগে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করে গত বছরের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিয়ে আবেদন জানান।
চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবেই মনোনয়ন পর্ব মিটেছে। এর আগে ওই কলেজে তো বিরোধীরা মনোনয়ন তুলতেই পারেননি। কিন্তু এ বার কড়া পুলিশি প্রহরা থাকায় প্রত্যেকেই মনোনয়নপত্র নিতে পেরেছে।”
মনোনয়নপর্ব মেটার পর এ দিন কলেজে হাজির হন সামসি কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি। তিনি বলেন, “সব ক্ষেত্রেই তৃণমূল বা টিএমসিপিকে অভিযুক্ত করাটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। আসলে কলেজে এবিভিপি ও এসএফআইয়ের কোনও ভিত্তিই নেই। তাই ওরা মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”
এ দিন গণ্ডগোলের আশঙ্কায় সকাল থেকেই বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। কলেজ লাগোয়া এলাকায় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারাও। কলেজে ঢোকার সব ক’টি রাস্তায় ছিল একাধিক ব্যরিকেড। বাইরে সব দলেরই একাধিক বহিরাগত হাজির থাকলেও পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে কলেজের ভিতরের ওই ঘটনা আটকানো যায়নি।