ফিরল হোমের ৭ কিশোর-কিশোরী

হুগলির গুড়াপে বেসরকারি হোমের এক আবাসিককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন ওই হোমের কর্তা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০২:২৩
Share:

হুগলির গুড়াপে বেসরকারি হোমের এক আবাসিককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন ওই হোমের কর্তা।

Advertisement

তার পর হোমটিও বন্ধ হয়ে যায়। সেই হোমেই ছিল মালদহ জেলার গাজলের এক কিশোরী-সহ ছয় কিশোর। সেখান থেকে নিয়ে এসে বুধবার তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিল মালদহ শিশু সুরক্ষা কমিটি। বাড়ির ছেলে মেয়েদের ফিরে পেয়ে খুশি তাঁদের পরিবার।

শিশু সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান হাসান আলি শা বলেন, “দি পনেরো আগে ধর্ষণের ঘটনার পর ওই জেলার প্রশাসন হোমটি বন্ধ করে দেন। ছেলেমেয়েদের অন্য আবাসনে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। আমাদের জেলার ছয় ছেলেমেয়েকেও সেখানে রাখা হয়।” তিনি জানান, সেখানকার প্রশাসনের কাছ থেকে সব জানার পর এই ছেলেমেয়েদের পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

Advertisement

পরিবারগুলিও ছেলেমেয়েদের ফিরে পেতে চাইছিল। এদিন সকলকে ফিরিয়ে এনে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

গাজলের মাজরা গ্রামপঞ্চায়েতের বেগুনবাড়ি গ্রামে একটি মিশনারি স্কুল রয়েছে। সেখানে গ্রামের বেশ কিছু ছেলেমেয়ে পড়াশুনা করত। বছর তিনেক আগে ওই মিশনারি স্কুল কর্তৃপক্ষ ছেলেমেয়েদের হুগলির গুড়াপের হোমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। অনেকে রাজি না হলেও অভাবের কারণে গ্রামের এক কিশোরী ও ছয় কিশোরকে তাদের পরিবারের লোকেরা হোমে পাঠিয়ে দেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এই কিশোর কিশোরীদের মধ্যে কারও বাবা নেই, কারও আবার বাবা মা দুই নেই। কেউ দাদুর বাড়িতে থাকত। আর্থিক অনটনে থাকা পরিবারগুলি তাই ছেলেমেয়েদের হোমে পাঠাতে রাজি হয়।

ওই হোমে সাবিত্রী হাঁসদা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। তার ভাই সুনীল হাঁসদা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। হোমে যাওয়ার আগে দু’জনই মালদহে দিদিমার কাছে থাকত। অন্য চার কিশোর প্রদীপ হেমব্রম, দেবা হাঁসদা, সুনম টুডু এবং বিশ্বনাথ মুর্মু’র বাবা মারা গিয়েছেন।

তাদের মায়েরা দিনমজুরি করে সংসার চালান। সাবিত্রী এদিন জানায়, শুনেছি হোমের শিক্ষক আমাদেরই এক বন্ধুর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। তাই ভয় করত খুব। আর আমি বাইরে যাব না।

গ্রামের স্কুলেই পড়ব। তার দিদিমা বুদিন দেবী বলেন, “টানাটানির সংসার। তাই ওদের বাইরে পাঠিয়েছিলাম। গুড়াপের ঘটনা জানার পর খুবই ভয় হয়েছে। সরকারের তরফে সাহায্য করা হবে শুনেছি। ওদের নিজের কাছেই রাখব।”

শিশু সুরক্ষা কমিটির সদস্য শুভময় বসু জানান, ছেলেমেয়েদের স্থানীয় একটি হাই স্কুলে ভর্তি করা হবে। পরিবারগুলি যাতে সরকারি যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পায়, তার জন্য ব্লক প্রশাসনকে আর্জি জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন