বেআইনি ভাবে নদীতে বাঁধ দেওয়া নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল প্রায় আট মাস আগে। অথচ দীর্ঘ দিন পরেও সে ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও সেচ দফতরের উদাসীনতার অভিযোগ উঠল।
বর্ষার মুখে আঠারোখাই পঞ্চায়েতের শিশাবাড়ি এলাকায় মাউরিয়া বস্তির কাছে বালাসন নদীতে অবৈধ ভাবে বাঁধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা বিমল রায় এবং তাঁর লোকজনদের বিরুদ্ধে। বিডিও অফিসে তা নিয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন করেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। অভিযোগ, এ ভাবে বাঁধ দিয়ে নদীখাতের একাংশকে বিচ্ছিন্ন করে জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকী স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অপর একাংশ মাস খানেক আগে পুলিশে অভিযোগও করেন।
ব্লক প্রশাসন কিছু না করায় তাঁরা সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের দফতরেও ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছেন। তার পরেও কেন পুলিশ প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী অবৈধ বাঁধ না সরালে ভবিষ্যতে নদীর গতিপথ বদলের জেরে বিপদের আশঙ্কাও করছেন অনেকে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি কী অবস্থায় রয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
বিমলবাবু অবশ্য গোড়া থেকেই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। এ দিন তাঁর মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বেজে গিয়েছে। এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জানান। সে সময় অভিযোগ তদন্ত করে দেখা এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও কিছু করা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে ভূমি এবং ভূমি রাজস্ব বিভাগের যোগসাজস রয়েছে। নদীতে বাঁধ দিয়ে নদীখাতের অংশ বিচ্ছিন্ন করে পরে তা অবৈধ ভাবে নথিভুক্ত করা হচ্ছে। বিক্রি করা হচ্ছে। শাসক দলের নেতাদের একাংশ যুক্ত বলে প্রশাসন পিছিয়ে আসছে বা তাঁদের একাংশই এ সবে যুক্ত।’’
অভিযোগ, গত বর্ষার মুখে সপ্তাহখানেক ধরে একাধিক ডাম্পার, ট্রিপার নামিয়ে বালি, পাথরের বস্তা দিয়ে বাঁধ তৈরির অভিযোগ ওঠে। সে সময় বিমলবাবু দাবি করেছিলেন বাঁধ না দিলে ভাঙনে এলাকা, মাউরিয়া বাজার, শ্মশান বিপন্ন হবে। কিন্তু নদীতে বাঁধ দিতে হলে তো সেচ দফতরের উদ্যোগী হওয়ার কথা। কোনও ব্যক্তি বা বাসিন্দাদের ওই কাজ করার কথা নয়। অথচ এর বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না সেই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেসের শিক্ষক নেতা সুজিত দাস বলেন, ‘‘আমরা ওই সময় বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। অথচ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’