বাইক-কাণ্ডে জামিনে মুক্ত ২৮

দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলির তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের মিছিল থেকে আটক বাইকের মালিক ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করল। ১৭ জন থানায় আত্মসমর্পণ করেন। গত সোমবার অর্পিতা ঘোষের প্রচার মিছিল থেকে বিধিভঙ্গের অভিযোগে ২৮টি বাইক পুলিশ আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে ধরা হয়েছিল বাকি ৮ জনকে। মঙ্গলবার সকালে ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:২৮
Share:

দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলির তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের মিছিল থেকে আটক বাইকের মালিক ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করল। ১৭ জন থানায় আত্মসমর্পণ করেন। গত সোমবার অর্পিতা ঘোষের প্রচার মিছিল থেকে বিধিভঙ্গের অভিযোগে ২৮টি বাইক পুলিশ আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে ধরা হয়েছিল বাকি ৮ জনকে। মঙ্গলবার সকালে ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরা সকলেই তৃণমূল কর্মী সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। তবে বাকি তিন জন বাইক চালকের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৮৮ ধারা (বিনা অনুমতিতে বাইক মিছিল) এবং মোটর ভেহিক্যাল আইনের ১৭৭ ধারায় (নিয়ম ভেঙে বাইক চালানো) মামলা করে বালুরঘাট আদালতে পাঠায়। বালুরঘাটের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয় চৌধুরী ধৃতদের ৫০০ টাকা’র ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেন। সরকারী আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার বলেন, “দুটি ধারাই জামিনযোগ্য। এর জন্য বিচারক মুক্তির নির্দেশ দেন।”

তবে হিলি থানা চত্বরে আটক করা রাখা হয়েছে ওই ২৮টি বাইক। ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী নীহার রায় অবশ্য বলেন, “সোমবার হিলিতে মিছিলের সময় মক্কেলরা বাইকে চেপে ব্যক্তিগত কাজে যাচ্ছিলেন সে সময় পুলিশ তাদের ধরে। আদালতে জরিমানা দিয়ে বাইকগুলি ছাড়ানো হবে।”

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি ঢাকতে দায় এড়িয়েছে তৃণমূল। মঙ্গলবার তৃণমূলের হিলি ব্লক সভাপতি আশুতোষ সাহা দাবি করেন, “আটক বাইকগুলির সঙ্গে দলীয় প্রার্থীর মিছিলের কোনও সম্পর্ক নেই। বাইকগুলিতে দলের কোনও ফ্ল্যাগও ছিল না।” তিনি জানান, আমরা প্রার্থীর রোডশোতে গাড়ির ব্যবহার ও বাইক মিছিলের অনুমতি নিয়েছিলাম। যাঁদের বাইক আটক করা হয়, তাঁরা কেউ ওই সময়ে বাইকে চেপে ওযুধ কিনতে, জেরক্স করতে যাচ্ছিলেন। একই ভাবে তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “ধৃতরা ওই সময় ব্যক্তিগত কাজে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে শুনেছি। ধৃতরা দলের কর্মী বা সমর্থক নন।” দলীয় সূত্রের খবর, হিলিতে পরপর দুটি ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ জেলা সভাপতি বিপ্লববাবু। আলাদা করে বাইকের নম্বর দিয়ে অনুমতির বদলে কেন বাইক মিছিলের অনুমতি নেওয়া হল, তা নিয়ে তিনি হিলির নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন।

পুলিশ এদিন ধৃতদের তৃণমূল সমর্থক বলে উল্লেখ করে বিধিভঙ্গের অভিযোগে দুটি ধারায় মামলা দায়ের করে নথিপত্র আদালতে পাঠায়। আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন হিলি ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশুতোষ সাহা ও হিলির তৃণমূল নেতা জেলা পরিষদে সহকারী সভাধিপতি কল্যাণ কণ্ডুু। তাঁদের বক্তব্য, “বাসিন্দারা সমস্যায়। মানবিকতার জন্য পাশে দাঁড়িয়েছি।”

এই নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না কংগ্রেস ও বামেরা। বালুরঘাটের কংগ্রেস প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “এর আগে হিলিতে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে মারপিট যারা আক্রান্ত হলেন, তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের চিনতে অস্বীকার করলেন। রাতারাতি আবার তাদের দল থেকে বহিস্কার করা হল। তৃণমূল এইভাবে স্থানীয় কর্মীদের সমস্যার সময় পরিত্যাগ করে জেলার যুব সম্প্রদায়কে অপমান করেছে।” বেকায়দায় পড়ে তৃণমূল শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান মানবেশ চৌধুরীও।

তিনি বলেন, “হিলিতে তৃণমূলের প্রার্থীকে নিয়ে বাইক মিছিলের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আলাদা করে বাইকের নম্বর দেওয়া হয়নি। এখন দায় অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেস শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে। বামফ্রন্ট নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement