অচলাবস্থা চলছেই নাগরাকাটার একলব্য মডেল স্কুলে।
সোমবার স্কুলের ছুটিতে পাঠানো অধ্যক্ষ অমরজিৎ সিংহ চহ্বান এবং সহকারা শিক্ষক মজিবুল ইসলামকে নিয়ে স্কুলে বৈঠক করেন জলপাইগুড়ি অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক। ছুটিতে পাঠানো অধ্যক্ষ ও শিক্ষক মজিবুল ইসলাম ছাড়া স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য ও অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নেতৃত্বে স্থানীয়দের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের একাংশ অধ্যক্ষ আসছেন শুনে স্কুলের গেট বন্ধ করে দিয়ে ধর্নায় বসে পড়ে। অধ্যক্ষকে স্কুলে ফেরানো যাবে না বলে পড়ুয়ারা স্লোগানও দিতে থাকে। ‘একলব্য বাঁচাও কমিটি’ নামের একটি অভিভাবকদের সংগঠনের সভাপতি জন বার্লা, সম্পাদক প্রবীণ খেড়োয়ারও অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি জানাতে থাকেন। বৈঠক ভেস্তে যায়। আটকে পড়েন প্রশাসনের অফিসারেরা। আজ, মঙ্গলবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এ বছরে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক, দু’টি ক্ষেত্রেই আগের চেয়ে ভাল ফল করেছে নাগরাকাটার একলব্য স্কুলের পরীক্ষার্থীরা। এই তথ্য সামনে রেখে অধ্যক্ষ অমরজিৎ সিংহ চহ্বানকে ফেরাতে আসরে নামেন অভিভাবকের অনেকে। পুলিশ, প্রশাসন, অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের তরফে অধ্যক্ষকে ফেরানোর ব্যাপারে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয় অভিভাবকদের। অথচ, একলব্য বাঁচাও কমিটির সভাপতি জন বার্লা অভিযোগ করে বলেন, “স্কুলে দুর্নীতি, পড়ুয়াদের মারধর সব কিছুর অভিযোগ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে রয়েছে। কেন তাঁকে সরানো হচ্ছে না? প্রশাসন কেন ছ’মাস পরেও অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান বুঝছি না।” পক্ষান্তরে, একলব্য স্কুল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা যুগল লাকড়া, অভিভাবক ললিতা টোপ্পোরা দাবি করেন, “অমরজিতবাবুর অধ্যক্ষ থাকার সময় স্কুলের পঠনপাঠন ও শৃঙ্খলার মান ভাল ছিল। অমরজিতবাবু অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেলে ভাল হবে।” এ দিন নাগরাকাটার বিধায়ক জোসেফ মুন্ডা বলেন, “একলব্য নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। পড়ুয়াদের প্ররোচনা দিয়ে আন্দোলন করানো হচ্ছে।”
উল্লেখ্য এ বছরের ২ মার্চ থেকে স্কুলে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে পড়ুয়াদের একাংশ ও কিছু অভিভাবক সরব হন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মারধর, গালি দেওয়ার অভিযোগ করেন বলে অভিযোগ করে নাগরাকাটা থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। ১১ -১৯ মার্চ স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে হস্টেল থেকে পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরে নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। ১৮ মার্চ অধ্যক্ষকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠান জেলাশাসক। বিক্ষোভে মদত দেওয়ায় অভিযোগে শিক্ষক মজিবুল ইসলামকেও ছুটিতে পাঠানো হয়। স্কুল খুললে ফের অচলাবস্থা শুরু হয়। তা কাটাতেই এ দিন বৈঠকের আয়োজন করে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর।